Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

নজর কমলেই জমছে ভিড়

বৈঠক শেষে স্বপনবাবু বলেন, “বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখতে পাচ্ছি, দল বেঁধে জটলা চলছে। লোকজন আম বাগানে ঘুরছেন, বাঁশ ঝাড়ে যাচ্ছেন। মোটরবাইকে দুতিন জন মিলে যাচ্ছেন, এ সব বন্ধ হওয়া দরকার।’’

জিজ্ঞাসাবাদ: কাটোয়ায় টহল। রবিবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

জিজ্ঞাসাবাদ: কাটোয়ায় টহল। রবিবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২০ ০১:০২
Share: Save:

‘লকডাউন’-এর পাঁচ দিন পরেও আড্ডা, ঘোরাফেরা চলছে অনেক জায়গাতেই। রাস্তায় মোটরবাইক নিয়ে তরুণ-তরুণীদের ঘুরতে দেখা যাচ্ছে, চায়ের দোকানেও চলছে আড্ডা। এমনকি, পাড়ায় বেঞ্চে রীতিমতো বৈঠকি মেজাজে তাস খেলতেও দেখা যাচ্ছে দু’-এক জনকে। রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের বৈঠকে এ নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। উদ্দেশ্যহীন যাতায়াতের বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে দেখার জন্যও বলেন তিনি।

বৈঠক শেষে স্বপনবাবু বলেন, “বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখতে পাচ্ছি, দল বেঁধে জটলা চলছে। লোকজন আম বাগানে ঘুরছেন, বাঁশ ঝাড়ে যাচ্ছেন। মোটরবাইকে দুতিন জন মিলে যাচ্ছেন, এ সব বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা হাতজোড় করে সবাইকে সতর্ক করছি। অকারণে বাইরে বার হবেন না।’’

নিজের বিধানসভা পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্র তো বটেই, গাড়িতে বা টোটোয় জেলার অন্য জায়গাতেও করোনাভাইরাস নিয়ে প্রচার করছেন মন্ত্রী। মাস্ক, সাবান বিলি করছেন। এ দিন ভিডিয়ো-বৈঠকে বিডিও ও বিধায়কদেরও তিনি বলেন, “দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) সবাইকে হাতজোড় করে সতর্ক ও সচেতন থাকার জন্য বলছেন। ডিএম, এসপি-রাও বলছেন। আপনারাও বলুন।’’ প্রশাসনের একটা অংশের দাবি, ‘লকডাউন’-এর প্রথম দু’দিন পুলিশ সক্রিয় থাকায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে রাস্তায় ঘোরাঘুরি অনেকটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি থেকে বেরোতেও মানুষজন ভয় পাচ্ছিলেন। কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি খানিক বদলায়। পুলিশ ‘ঢিলে’ হতেই শুক্রবার রাত থেকেই বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে-চুরিয়ে চায়ের দোকান খুলতে দেখা যায়। বিভিন্ন মোড়ে আড্ডাও শুরু হয়।

কালনার একাধিক বাজারেও নিয়ম না মেনেই কেনাকাটা চলে। সব থেকে বেশি ভিড় ছিল ধাত্রীগ্রাম পাইকারি বাজারে। এসটিকেকে রোডের দুধারে ফসল নিয়ে আসা চাষি ও ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায় সকাল ৯টা পর্যন্ত। চকবাজারেও প্রশাসনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া দাগ না মেনেই মাছ, মাংস কিনতে দেখা যায় ক্রেতাদের। জিউধরার আরএমসি বাজারেও দুপুর পর্যন্ত ভিড় করে আনাজ কেনাবেচা চলে। মাস্কও ব্যবহার করতে দেখা যায়নি তেমন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরা বাজারে টহল দিচ্ছেন। তার আগেই কেনাকাটা করে ঘরে ফিরতে চাইছেন অনেকে। ফলে ভোর থেকেই ভিড় দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোরও দাবি করেছেন তিনি। কালনার মহকুমাশাসক সুমন সৌরভ মোহান্তি বলেন, “বাজারগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। আমি নিজে বাজার ঘুরব।’’

জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কড়া না হলে অবাধ্য ছাত্ররা কথা শোনে না। এখন সেটাই হচ্ছে। পুলিশ যাচ্ছে, তখন ফাঁকা। পুলিশ চলে এলেই জটলা শুরু হয়ে যাচ্ছে।’’ তবে এ দিন থেকে জেলা পুলিশ ফের বিভিন্ন জায়গায় টহল দিতে শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো ‘নরমে-গরমে’ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছে পুলিশ।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ সক্রিয় থাকলে তবেই কি ‘লকডাউন’ সফল করা সম্ভব। স্বপনবাবু বলেন, “এখন তো হাতজোড় করে সতর্ক ও সচেতন করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, করলার রস খাও। পুলিশও হাতজোড় করছে। কথা না শুনলে দেখা যাবে। রস তো খাওয়াতেই হবে।’’

কাটোয়ায় অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। সাইকেল, বাইক দেখলে রাস্তায় বেরনোর কারণ জিজ্ঞাসা করে পুলিশ। মহকুমাশাসক প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, “লকডাউন অমান্য করলেই উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশ রাস্তায় নজরদারি চালাচ্ছে।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE