প্রতীকী ছবি
‘লকডাউন’-পরিস্থিতিতে ওষুধ পেতে সমস্যা হচ্ছে। পরিবহণগত সমস্যায় খোলা বাজার থেকে চড়া দামে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। এমনই অভিযোগ করে আসানসোল জেলা হাসপাতালের কাছে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানের থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পরিবারগুলি।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার নানা প্রান্তের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত প্রায় ২৭৫ জন রোগী এখান থেকে নিয়মিত চিকিৎসা পরিষেবা পান। চাহিদা মতো তাঁদের রক্তও দেওয়া হয়। কিন্তু জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় জানান, রক্তের পাশাপাশি, ওই রোগীদের দৈনিক দু’টি করে ওষুধ খেতে হয়। সেই ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয় না। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের ‘প্রেসক্রিপশন’ নিয়ে গিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল অথবা বাঁকুড়া মেডিক্যাল থেকে ওষুধ সংগ্রহ করতে হয় আক্রান্তের পরিবারকে।
কিন্তু জরুরি পরিষেবায় ছাড় থাকলেও ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে পরিবহণে সমস্যা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এপ্রিলের গোড়া থেকে সমস্যা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। বার্নপুরের একটি এলাকার দশম শ্রেণির এক পড়ুয়া থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। ওই পড়ুয়ার মা বলেন, ‘‘ছেলের ওষুধ ছাড়া চলবে না। কিন্তু বর্ধমান বা বাঁকুড়া যেতে পারিনি। এপ্রিলে খোলা বাজার থেকে ওষুধ কিনেছি। কিন্তু আর সম্ভব নয়।’’ একই সমস্যায় পড়েছে নুনির বাসিন্দা এক থ্যালাসেমিয়া রোগীর পরিবার। রোগীর বাবা বলেন, ‘‘মাসের ওষুধ কিনতে আট হাজার টাকা দরকার। কিন্তু আমার রোজগার বন্ধ। কী ভাবে খরচ জোগাড় করব জানি না!’’
থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পরিবারগুলির একাংশ জানায়, সমস্যা সমাধানে জেলা হাসপাতালের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু তার পরেও তাঁরা নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। এ প্রসঙ্গে জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘এখান থেকে চিকিৎসা পেলেও রোগীদের ওষুধ সংগ্রহ করতে হয় বর্ধমান অথবা বাঁকুড়া থেকে। সমস্যার কথা বহু দিন আগেই ঊর্ধ্বতন কর্তাদের জানানো হয়েছে। তাঁরা দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।’’
এ দিকে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিল থেকে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তদের ওষুধ জেলা হাসপাতাল থেকে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু ‘লকডাউন’ ও ‘করোনাভাইরাস’ সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে সে বিষয়ে আর পদক্ষেপ করা হয়নি। ‘লকডাউন’ না উঠলে এ বিষয়ে আদৌ পদক্ষেপ করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর পরিবারের সদস্য থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy