Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

বিড়ি শিল্পে ছাড়, খুশি শ্রমিকেরা

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই মহকুমার কাঁকসার গোপালপুর, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, বনকাটি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় দু’হাজার শ্রমিক কেন্দু পাতা সংগ্রহ ও বিড়ি বাঁধার কাজে যুক্ত।

 কাজে মগ্ন। কাঁকসায়। নিজস্ব চিত্র

কাজে মগ্ন। কাঁকসায়। নিজস্ব চিত্র

বিপ্লব ভট্টাচার্য
কাঁকসা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০২:২৪
Share: Save:

‘লকডাউন’-এর মধ্যেও রাজ্যের বিড়ি শ্রমিকদের গতিবিধিতে কিছু ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে সে ক্ষেত্রে শর্ত, উপযুক্ত সতর্কতাবিধি মানতে হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দুর্গাপুর মহকুমার বিড়ি শ্রমিকেরা।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই মহকুমার কাঁকসার গোপালপুর, ত্রিলোকচন্দ্রপুর, বনকাটি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় দু’হাজার শ্রমিক কেন্দু পাতা সংগ্রহ ও বিড়ি বাঁধার কাজে যুক্ত। বিড়ি শ্রমিকেরা জানান, কাঁকসার বিভিন্ন জঙ্গল থেকে বিড়ি তৈরির মূল উপকরণ কেন্দু পাতা সহজেই মেলে। তা সংগ্রহ করে মহাজনদের কাছে বিক্রি করা হয়। মহাজনেরা বিভিন্ন বিড়ি কারখানায় সেই পাতাগুলি বিক্রি করেন।

সাধারণ ভাবে, কাঁকসার বিড়ি কারখানাগুলিতে এলাকারই বহু শ্রমিক কাজ করেন। পাশাপাশি, অনেক কারখানা শ্রমিকদের কাঁচামাল দিয়ে দেয়। চুক্তির বিনিময়ে শ্রমিকেরা বাড়িতেই বিড়ি তৈরি করেন।

কিন্তু ‘লকডাউন’ শুরুর পর থেকে রুজিতে টান পড়েছে বলে জানান বিড়ি শ্রমিকেরা। কাঁকসার ২ নম্বর কলোনির অনিতা বিশ্বাস-সহ কয়েক জন বিড়ি শ্রমিক জানান, তাঁরা গোপালপুরের এক মহাজনের কাছ থেকে বিড়ি তৈরির কাঁচামাল নিয়ে আসেন। বিড়ি তৈরি হলে পারিশ্রমিক মেলে মহাজনের কাছ থেকে। অনিতাদেবীর দাবি, সাধারণ ভাবে এক হাজার বিড়ি তৈরি করতে পারলে দেড়শো টাকার মতো পারিশ্রমিক মেলে। তিনি বলেন, “বাড়ির সব কাজ করে সাত-আটশো বিড়ি এক দিনে বানাতে পারি। কিন্তু ‘লকডাউন’ গোটা পরিস্থিতিটাই বদলে দিয়েছে।”

গোপালপুরের সুমিতা হালদার, কিরণ বিশ্বাস-সহ কয়েকজন বিড়ি শ্রমিক জানান, ‘লকডাউন’-এর ফলে মহাজনদের কাছ থেকে কাঁচামাল আনা যাচ্ছিল না। পাশাপাশি, বিক্রির জায়গা না থাকায় কারখানাগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে, তাঁরা আতান্তরে পড়েছেন। সংসার চালাতেও সমস্যা হচ্ছে।

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই শিল্পক্ষেত্রটিকে ছাড় দেওয়ার কথা জানালেও নির্দিষ্ট সতর্কতাবিধি মেনে চলার কথাও বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরে বিড়ি শ্রমিক অনিতাদেবী, সুমিতাদেবীরা বলেন, “সরকারের সব সিদ্ধান্তই আমরা মেনে চলব। পাশাপাশি, এই মরসুমে আমাদের শিল্পকে ছাড় না দেওয়া হলে বড় ক্ষতি হয়ে যেত। কারণ, এখনই কেন্দু পাতা সংগ্রহের সময়।”

তবে এসইউসি সমর্থিত ‘বর্ধমান জেলা বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন’-এর সভাপতি সুচেতা কুণ্ডুর প্রতিক্রিয়া ‘‘আমাদের দাবি ছিল, এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের মাসে তিন হাজার টাকা ভাতার ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের আশঙ্কা, শ্রমিকেরা বাইরে যাবেন। সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে।’’

বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “সরকারের নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। হাতে পেলে, যাবতীয় নির্দেশিকা মেনে কাজ করা হবে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE