Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

জমি অধিগ্রহণ মামলায় জেলাশাসককেই জেলে পাঠানোর নির্দেশ কোর্টের

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, হাইকোর্ট থেকে ওই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ আনতে না পারলে জেলাশাসককে জেলে যেতেই হবে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “শুক্রবার হাইকোর্টে আবেদন  জানানো হবে।’’

অনুরাগ শ্রীবাস্তব।

অনুরাগ শ্রীবাস্তব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৮
Share: Save:

আদালতের নির্দেশের ছ’বছর পরেও অধিগৃহীত জমির বর্ধিত দাম মেটায়নি জেলা প্রশাসন। সেই কারণে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসককে দেওয়ানি জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (প্রথম) শেখ মহম্মদ রেজা। বৃহস্পতিবার ওই নির্দেশে তিনি জানান, সোমবার জেলাশাসককে তাঁর এজলাসে সশরীরে হাজির থাকতে হবে। ওই দিনই তাঁকে বর্ধমান সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। ওই দিন হাজির না থাকলে তাঁকে এক মাস পর্যন্ত জেল খাটতে হবে।

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, হাইকোর্ট থেকে ওই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ আনতে না পারলে জেলাশাসককে জেলে যেতেই হবে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “শুক্রবার হাইকোর্টে আবেদন জানানো হবে।’’

বর্ধমান শহর লাগোয়া গোদা এলাকায় উপনগরী তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করেছিল জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ দফতর। সেই সময় জমির দাম বাবদ সরকার ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল শতক পিছু ৫ হাজার ৮৮৬ টাকা। দামে খুশি না হয়ে জমির মালিক আব্দুল রহিম, আব্দুল আজিজ ও আব্দুল আলম আদালতে মামলা করেন। ২০১২ সালে আদালত শতক পিছু ৩৫ হাজার টাকা দাম দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তার সঙ্গে ১৫ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। আইনজীবীরা জানান, ওই তিন জমির মালিকের এক একর ৭৩ শতক অধিগৃহীত জমির জন্য সরকারের কাছে পাওনা রয়েছে ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা।

জমির মালিকদের আইনজীবী রাজকুমার গুপ্ত বলেন, “জেলাশাসককে জেলা ঢোকানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে জেলাশাসককে জেল খাটানোর জন্য জমির মালিককে ‘অস্তিত্ব ভাতা’ বাবদ ১ হাজার ৮০ টাকা দেওয়ারও নির্দেশ হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবারই ওই টাকা ট্রেজারিতে জমা করেছেন জমির মালিকরা। রাজকুমারবাবু জানান, এর আগে জেলাশাসকের বাংলো নিলামে চড়ানো হয়েছিল, মিথ্যা হলফনামা দেওয়ার জন্যে ভূমি অধিগ্রহণ দফতরের কর্তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “সরকার নানা অছিলায় টাকা দিতে দেরি করছে বলে এই মামলায় সরকারকে ১০ হাজার টাকা ও সহযোগী বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জমির মালিকরা ওই টাকা পাবেন।’’

বর্ধমান আদালতের অন্য আইনজীবীদের দাবি, এমন নির্দেশ সচরাচর শোনা যায় না। প্রবীণ আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “৫০ বছর ধরে আদালতে রয়েছি। এ রকম নির্দেশ আগে শুনিনি।’’ আইনজীবী রাজদীপ গোস্বামীও বলেন, “আমাদের পরিবার আইন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বাবাদের মুখেও এ রকম নির্দেশ কোনও বিচারক দিয়েছেন বলে শুনিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jail District Magistrate Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE