Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
জেলায় জোর তল্লাশিতে

সাইবার অপরাধী ১০০ জন

ঘটনাটি কী? পুলিশ জানায়, গত ৪ ডিসেম্বর নাগপুরের এক ব্যক্তি স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন, ব্যাঙ্ক আধিকারিকের নাম করে তাঁর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে এটিএম কার্ডের তথ্য, পিন নম্বর।

প্রতারণায় ধৃত। নিজস্ব চিত্র

প্রতারণায় ধৃত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪১
Share: Save:

সাইবার-প্রতারণা নাগপুরের বাসিন্দার সঙ্গে। দুষ্কৃতী পাকড়াও হল কুলটির চার নম্বর শীতলপুর থেকে। এই ঘটনা সামনে আসার পরে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের একাংশের ধারণা, ভিন্-রাজ্যের সাইবার অপরাধীদের একটি বড় অংশই ডেরা বাধছে এ রাজ্যের সীমানা এলাকায়।

ঘটনাটি কী? পুলিশ জানায়, গত ৪ ডিসেম্বর নাগপুরের এক ব্যক্তি স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন, ব্যাঙ্ক আধিকারিকের নাম করে তাঁর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে এটিএম কার্ডের তথ্য, পিন নম্বর। গায়েব হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। তদন্তে নেমে নাগপুর পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখার আধিকারিকেরা দু’জনকে চিহ্নিত করে। প্রদীপ মণ্ডল ও মহাবীর মণ্ডল নামে ওই দুই ব্যক্তির মোবাইলের ‘টাওয়ার লোকেশন’ দেখায় চার নম্বর শীতলপুর এলাকা। এর পরে ওই দু’জনকে শুক্রবার রাতে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ গ্রেফতার করে। শনিবার নাগপুরের পুলিশ ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে নাগপুর নিয়ে গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধৃত দু’জনেই ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া মহকুমার কুরমি গ্রামের বাসিন্দা। নাগপুর পুলিশের তরফে প্রশান্ত পত্তাঙ্কর বলেন, ‘‘ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আরও কিছু তথ্য জানতে হবে। কারণ এমন আরও কিছু প্রতারণার অভিযোগ মিলেছে।’’

এই ঘটনাটি ছাড়াও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আসানসোলের লোয়ার চেলিডাঙা ও মে-তে হিরাপুরের নরসিংহবাঁধ থেকে এক জনকে সাইবার প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করে হায়দরাবাদ পুলিশ। জুলাইয়ের প্রথম দিকে আসানসোলের শ্রীপল্লি ও অণ্ডালের উখড়া থেকে পাঁচ জন, গত ১৪ জুলাই রূপনারায়ণপুরের জোড়বাড়ি ও সালানপুরের দেন্দুয়া থেকে দু’জনকে ধরে পুলিশ। এর কয়েক দিন পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানার পুলিশ রূপনারায়ণপুর লাগোয়া কলাডাবর ও সিদাবাড়ি এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়াও একাধিক বার ভিন্-রাজ্য ও ভিন্-জেলার পুলিশ নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শিল্পাঞ্চলে এসে তল্লাশি চালিয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘নাগপুর পুলিশ যে দু’জনকে ধরেছে, তারা জামতাড়ার বাসিন্দা। এই দু’জনের মতো কেউ কেউ জামতাড়া-সহ ঝাড়খণ্ডের নানা এলাকা থেকে আমাদের রাজ্যে এসে গা ঢাকা দিচ্ছে। তাদের ধরতে ধারাবাহিক তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’

অতীতের নানা ঘটনায় সাইবার-প্রতারণার তদন্তে নেমে পুলিশ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখেছে, এই ধরনের অপরাধীরা মূলত ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, কুরমি, কুণ্ডিহি, নারায়ণপুর, কর্মাটরের বাসিন্দা। কিন্তু তাদের খোঁজ মিলছে পশ্চিমবঙ্গের সীমানা ঘেঁষা কুলটি, বরাকর, রূপনারায়ণপুর, নিয়ামতপুর, সালানপুর-সহ নানা এলাকায়।

কেন এমনটা? কমিশনারেট জানায়, জামতাড়ার এই দুষ্কৃতীরা নিজেদের এলাকায় বসে দেশ জুড়ে সাইবার-প্রতারণার জাল ছড়িয়েছে। এই তথ্য ঝাড়খণ্ড-সহ নানা রাজ্যের পুলিশেরই জানা। তাই ওই সব এলাকায় ঘনঘন পুলিশি অভিযান ও কড়া নজরদারি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের চোখে ধুলো দিতে সাইবার-অপরাধীরা জামতাড়া থেকে পালিয়ে সীমানা ঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গের শহরগুলিতে চলে আসছে। যদিও কমিশনারেট জানায়, শিল্পাঞ্চলে রয়েছে, এমন প্রায় একশো জন সাইবার-অপরাধীর তালিকা তৈরি করে জোরদার তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Crime Kulti Border Area
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE