Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লাইন বন্ধের প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা

শনিবার জামালপুরে তৃণমূলের জেলা সম্মেলনে এসে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্ধমান-কাটোয়া রেললাইন বন্ধ করবে? ক্ষমতা থাকলে বন্ধ করুক। কোনও লাইন বন্ধ হবে না।’’

প্রতিবাদে বাউলগান। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদে বাউলগান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

পুরো লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে মোটে সপ্তাহখানেক। তার মধ্যেই তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। রাজ্যের যে আটটি লাইনে ট্রেন বন্ধের প্রস্তাব দিয়ে পূর্ব রেল নবান্নে চিঠি পাঠিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বর্ধমান-কাটোয়া লাইনও। আর তার পরেই সংশয় তৈরি হয়েছে যাত্রীদের মনে। গোটা বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।

শনিবার জামালপুরে তৃণমূলের জেলা সম্মেলনে এসে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্ধমান-কাটোয়া রেললাইন বন্ধ করবে? ক্ষমতা থাকলে বন্ধ করুক। কোনও লাইন বন্ধ হবে না।’’ কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটি প্রকল্পের জন্য রেললাইনটি তৈরি হয়েছে। সেখানে অর্ধেক টাকা দিয়েছে এনটিপিসি। সেই লাইন বন্ধ করে দেওয়ার কথা ওঠে কী ভাবে!’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য এ দিনই আসানসোলে বলেন, ‘‘রাজ্যের উচিত, ওই রুটগুলিতে কেন রেল লোকসান করছে, তার কারণ খুঁজে বের করা।’’

বর্ধমান থেকে শ্রীখণ্ড ট্রেন চললেও শ্রীখণ্ড থেকে কাটোয়া সাত কিলোমিটার লাইন চালু হয়নি এত দিন। ১২ জানুয়ারি থেকে সেই লাইনও চালু হয়ে গিয়েছে। বর্ধমান থেকে কাটোয়া দিনে একটি ট্রেন আপ-ডাউনে চলছে। যাত্রীদের দাবি, বিকেলের ট্রেন হলেও ভিড় হচ্ছে ভালই। তাই আচমকা রেলের ওই চিঠির কথা জানতে পেরে তাঁরা আশঙ্কায় পড়েছেন। শনিবার কাটোয়া-হাওড়া সাবার্বান প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে এই সিদ্ধান্ত দুঃখজনক ও জনস্বার্থ বিরোধী দাবি করে ই-মেল পাঠানো হয়। সংগঠনটির কাটোয়া স্টেশন কমিটির সম্পাদক দেবাশিস বসুর বক্তব্য, ‘‘এই সিদ্ধান্তে নিত্যযাত্রীদের ক্ষতি হবে।’’

এ দিন দুপুরে বর্ধমান থেকে ট্রেন ছাড়ার আগে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য রেললাইনে নেমে পড়েন কিছু যাত্রী। নিগন গ্রামের বাসিন্দা ভোলানাথ বাগ বলেন, ‘‘প্রতিদিন কলকাতা যাতায়াত করি। ট্রেন বন্ধ করে দিলে খুব মুশকিলে পড়ব।’’ একই বক্তব্য কৈচরের অসীমা দত্ত, বাহামনি মান্ডি, ভাতারের লীনা হাজরাদের। গোটা লাইনে যেখানে সবে ট্রেন চালানো শুরু হয়েছে সেখানে এত তাড়াতাড়ি অলাভজনক বলে ধরা হচ্ছে কেন, সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। বর্ধমানের নিত্যযাত্রী সমিতির সভাপতি কৃষ্ণকিশোর যশের দাবি, সময় ঠিক করে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হলেই লাভ হবে রেলের। আরও টিকিট পরীক্ষক চালুর দাবিও তুলেছেন যাত্রীদের একাংশ। এ দিন বিকেলে কাটোয়া স্টেশনে এসে গান ধরেন বর্ধমানের বাউলশিল্পী স্বপন দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না।’’ নিত্যযাত্রী অমৃতা ঘোষ, ইন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘ট্রেন তুলে নিলে আগের মতো বাসে বেশি ভাড়া ও সময় নষ্ট করে বর্ধমান যেতে হবে।’’

শুক্রবারই অবশ্য রেলের তরফে জানানো হয়েছে, সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সুপারিশ মেনে চিঠি লেখা হয়েছে। এটা নীতিগত অবস্থান। তা বলে রেল পরিষেবা এখনই বন্ধ হয়ে যাবে, এমনটা নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE