Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

এক বালতি জল ভরতেই পার আধ ঘণ্টা

জল-সমস্যায় ভুগছে দাঁইহাট। কোথাও পানীয় জলে নোংরা, কোথাও নিকাশির নোংরা জলেই চলছে বসবাস। কী ভাবছে প্রশাসন, বাসিন্দারাই বা কী বলছেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার।জল-সমস্যায় ভুগছে দাঁইহাট। কোথাও পানীয় জলে নোংরা, কোথাও নিকাশির নোংরা জলেই চলছে বসবাস। কী ভাবছে প্রশাসন, বাসিন্দারাই বা কী বলছেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

ভরসা এই জলাধার। নিজস্ব চিত্র

ভরসা এই জলাধার। নিজস্ব চিত্র

সুচন্দ্রা দে
দাঁইহাট শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

একে সরু সুতোর মতো জল পড়ে, তাতে আবার নোংরা— অথচ নদীর পাশেই বাস!

এমনটাই বলেন দাঁইহাটের বাসিন্দারা। ভাগীরথী পাড়ের এ পুরসভার বয়স দেড়শো। অথচ পানীয় জলের মতো জরুরি পরিষেবা নিয়েই অসন্তোষ রয়েছে শহরবাসীর। তাঁদের দাবি, ভাগীরথীর জল শোধন করে বাড়ি বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারলে মিটবে জলসঙ্কট।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুরসভা থেকে দিনে চার বার জল দেওয়া হয়। সকাল ছটা থেকে সাড়ে সাতটা, বেলা সাড়ে ন’টা থেকে ১০টা ১৫, দুপুর ১২ টা থেকে ১টা ১৫ ও বিকাল চারটে থেকে সাড়ে চারটে। তারপরেও পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকাতেই পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। চরদাঁইহাট, রাজোয়ার পাড়া, লেক গার্ডেন্সের মতো এলাকায় দিনে চার বার জল এলেও তাতে প্রয়োজন মেটে না বাসিন্দাদের। রুবি পাত্র, মনীষা সাহাদের অভিযোগ, ‘‘এত সরু হয়ে জল পড়ে যে এক বালতি ভর্তি হতেই প্রায় আধ ঘন্টা সময় লেগে যায়। তার উপর জলে নোংরা। ওই জল শোধন না করে পান করা যায় না।’’ তাঁদের অভিযোগ, সকালে দেড় ঘন্টা পুরসভার জল আসার কথা, কিন্তু আদতে ঘন্টাখানেকের জন্য জল আসে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে জল আসতেও সমস্যা হয়। তখন কেনা জলই ভরসা।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে পুরসভার একটিমাত্র জলাধার ও চারটি ছোট সাত-অশ্বশক্তি সম্পন্ন গভীর নলকূপ থেকে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছয়। তবে সম্প্রতি স্কুল রোড ও আমদানি ঘাট রোডে ১৫ অশ্বশক্তিসম্পন্ন দুটি সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী ফি দিন মাথা পিছু যেখানে ১৩৫ লিটার জল পাওয়ার কথা, সেখানে এই পুরসভার বাসিন্দারা ৯০ থেকে ১০০ লিটার জল পান। পুর প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এক লক্ষ গ্যালন জলধারণের ক্ষমতাসম্পন্ন জলাধারটি ৩৬ বছরের পুরনো। ফলে এর পাইপগুলোর দেওয়ালে শ্যাওলা জমেছে ও মরচে ধরেছে। যদিও জলাধারটি বছরে বার চারেক পরিষ্কার করা হয় বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।

পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল জানান, জলের সঙ্কট মেটাতে বেলতলা, ঘোষপাড়া ও লেক গার্ডেন্স এলাকায় তিনটি সাবমার্সিবল বসানোর জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল। তার মধ্যে বেলতলা ও ঘোষপাড়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী সোমবার থেকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের লেক গার্ডেন্স এলাকায় কাজ শুরু হওয়ার কথা বলেও তাঁর দাবি। তিনি আরও দাবি, ‘‘মাস খানেকের মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়ায় একটি জল পরিশোধন প্রকল্প চালু হবে। ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানে’ তৈরি এই প্রকল্পে চারটি জলাধার থাকবে। এই কাজ হয়ে গেলে পরিশুদ্ধ পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে।’’ (চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dainhat Water Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE