Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হাতির শুঁড়ে জখম বাবা, থানায় ছুটল মেয়ে

শুক্রবার বিকেলে গলসি থানার সামনে দাঁড়িয়ে হরিশঙ্করবাবুর মেয়ে, পেশায় আশা কর্মী চম্পা ঘোষ বলেন, “হাতির শুঁড়ে আছাড় খেয়ে আমার বাবা দুর্গাপুরের রাজবাঁধে নার্সিংহোমে ভর্তি। সে জন্য আমি হাতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে থানায় এসেছি।” তাঁর

সৌমেন দত্ত
গলসি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৮
Share: Save:

তার হামলায় বাবা আহত হয়েছেন। ভর্তি নার্সিংহোমে। মেয়ে মনে করেছেন, পুলিশই শাস্তি দিতে পারবে হামলাকারীকে। কিন্তু, সেই অভিযোগ পেয়ে থানা পড়ল বিষম বিপাকে। কারণ, অভিযুক্ত যে হাতি! হাতির বিরুদ্ধে জেনারেল ডায়েরি নেওয়ার বিধান আইনে আছে কিনা, তা-ও জানা নেই।

কর্তব্য স্থির করতে না পেরে শেষ তক অভিযোগপত্র বন দফতরের কাছে পাঠিয়ে হাঁফ ছেড়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রামের রাস্তায় প্রার্তভ্রমণ করছিলেন গলসির লোয়া-সন্তোষপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী হরিশঙ্কর ঠাকুর। বছর চৌষট্টির হরিশঙ্করবাবুর সঙ্গে ছিলেন ওই গ্রামেরই আমিনা বেগম ও কাকলি বাগদি। তাঁদের কথায়, “আমরা প্রতিদিন গ্রামের রাস্তায় প্রাতর্ভ্রমণ করি। বৃহস্পতিবার ভোরেও হাঁটছিলাম। কে জানত, রাস্তার ধারে মুড়ির কলের পাশে হাতি ঘাপটি মেরে বসে থাকবে!’’ তাঁদের দাবি, দূর থেকে হাতিটিকে দেখতে পাননি। হাল্কা কুয়াশাও ছিল। মুড়ির কলের পাশেই যেতেই হাতি একেবারে সামনে এসে পড়ে। পালানোর সময় হরিশঙ্করবাবুকে শুঁড়ে করে তুলে মাটিতে আছাড় মারে। শুঁড়ের ঝাপটা খেয়ে সামান্য জখম হন ওই দুই মহিলাও।

এই সেই অভিযোগপত্র। নিজস্ব চিত্র

শুক্রবার বিকেলে গলসি থানার সামনে দাঁড়িয়ে হরিশঙ্করবাবুর মেয়ে, পেশায় আশা কর্মী চম্পা ঘোষ বলেন, “হাতির শুঁড়ে আছাড় খেয়ে আমার বাবা দুর্গাপুরের রাজবাঁধে নার্সিংহোমে ভর্তি। সে জন্য আমি হাতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে থানায় এসেছি।” তাঁর মা লক্ষ্মী ঠাকুরের কথায়, ‘‘অশান্তি-ঝগড়া হলে তো আমরা থানাতেই আসি। হাতির কাছে স্বামী মার খেয়েছে বলেই আমরা থানায় এসেছি। পুলিশ এর বিচার করুক।’’

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার সোনামুখী জঙ্গল থেকে দামোদর পার হয়ে লোয়া-সন্তোষপুর গ্রামে আসে হাতিটি। সেখান থেকে কাঁকসার জঙ্গলে যাওয়ার পথেই হরিশঙ্করবাবু-সহ চার জনকে জখম করে। তাঁদের মধ্যেই দু’জন এ দিন গলসি থানায় জেনারেল ডায়েরি করতে গিয়েছিলেন। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ নিলেও কোনও জিডি করেনি।

পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “থানায় অভিযোগ করলে ক্ষতিপূরণ মিলবে, এই আশায় জেনারেল ডায়েরি করতে এসেছিলেন ওঁরা। কিন্তু, হাতির বিরুদ্ধে কী ভাবে জেনারেল ডায়েরি নেব? সে জন্য অভিযোগটি নিয়ে বনদফতরের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক জনকে হাতি জখম করেছে বলে তাদের কাছে খবর আছে। কিন্তু, বিশদ তথ্য হাতে পায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Attack Police Complaint Daughter Father
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE