Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মদের দোকানে প্রহরীর দেহ উদ্ধার, ক্ষোভ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের মতোই রবিবার রাতে ওই মদের দোকানে রাতপাহারা দিতে যান রবি ওঁরাও (৫৪)। দোকান থেকে কিছুটা দূরেই তাঁর বাড়ি।

ঘটনাস্থলে কুকুর নিয়ে তদন্তে পুলিশ। সোমবার নতুনডিহিতে। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থলে কুকুর নিয়ে তদন্তে পুলিশ। সোমবার নতুনডিহিতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হিরাপুর শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

মদের দোকানের নৈশপ্রহরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তেতে উঠল পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুরের নতুনডিহি এলাকা। সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই প্রহরীর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ জানায়, ওই দোকানে লুটপাটও চালানো হয়েছে। এ দিন কুকর নিয়ে এসে ঘটনার তদন্ত করা হয়। দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের পাশাপাশি এলাকা থেকে ওই দোকানটি সরানোর দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের মতোই রবিবার রাতে ওই মদের দোকানে রাতপাহারা দিতে যান রবি ওঁরাও (৫৪)। দোকান থেকে কিছুটা দূরেই তাঁর বাড়ি। মৃতের ভাই সনাতন ওঁরাও সোমবার বলেন, ‘‘ভোরে আমরা এক প্রতিবেশী মারফত খবর পাই, দোকানের সামনে উঠোনে খাটিয়ায় দাদার দেহ পড়ে রয়েছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি, সব শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ খবর ছড়িয়ে পড়তেই মৃতের প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ পৌঁছলে তাদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তদন্তের জন্য কুকুর আনা হয়। পৌঁছন কমিশনারেটের এসিপি (পশ্চিম) শান্তব্রত চন্দ।

পুলিশ দেহ তুলতে গেলে মৃতের পরিজনেরা বাধা দেন। তাঁদের দাবি, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের মধ্যস্থতায় ওই দোকানের মালিক উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়ার পরে দেহ আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মদের দোকানের মালিক অভিযোগ করেছেন, দোকান থেকে বেশ কিছু টাকা ও মদ লুট করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মদের দোকানে লুট করতেই এসেছিল দুষ্কৃতীরা। প্রহরী বাধা দেওয়ায় অথবা দুষ্কৃতীদের চিনে ফেলায় তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের শরীরের নানা জায়গায় আঁচড়ের দাগ দেখা গিয়েছে। তবে দেহটি যে ভাবে খাটিয়ায় পড়েছিল তাতে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করাও হয়ে থাকতে পারে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই কী ভাবে মৃত্যু, তা পরিষ্কার হবে বলে জানান তদন্তকারীরা।

এই ঘটনার পরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে ওই মদের দোকানটি এলাকা থেকে সরানোর দাবিতে সরব হয়েছেন। এ দিন বেশ কিছু মহিলা পুলিশের কাছে এ বিষয়ে ক্ষোভ জানান। তাঁদের অভিযোগ, মদের দোকানে সব সময় ‘মত্ত’ মানুষজনের ভিড় লেগে থাকে। দোকানের আশপাশের রাস্তা ধরে পাড়ায় যাতায়াত করতে সমস্যা হয়। মহিলাদের দিকে অনেক সময়ে কেউ-কেউ কটূক্তিও করে বলে অভিযোগ। মদের দোকানের মালিক অবশ্য জানান, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নিয়ম মেনেই দোকান চলছে।

মাস তিনেক আগে এই এলাকায় রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে খুন হন স্থানীয় আনাজ মান্ডির এক কর্মী। তার পরে ফের এই ধরনের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত বলে জানান বাসিন্দারা। পুলিশ জানায়, খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death Murder Police Liquor Store
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE