Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Death

করোনা সন্দেহে বৃদ্ধের দেহ পড়ে চার ঘণ্টা

এক সিভিক ভলান্টিয়ার এসে মৃতের মেয়ে ও দু’এক জন আত্মীয়ের সঙ্গে ভ্যানে চাপিয়ে দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন আউশগ্রামের দ্বারিয়াপুরের বছর সাতাত্তরের বৃদ্ধ। রবিবার সকালে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তবে পথেই তিনি মারা যান, দাবি পরিবারের। দুপুর দেড়টা নাগাদ দেহ বাড়িতে আনা হয়। কিন্তু মৃত করোনা আক্রান্ত বলে গুজব রটে যাওয়ায় দেহ পড়ে থাকলেও সৎকারের ব্যবস্থা করতে আত্মীয় বা পড়শিরা কেউ এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। থানায় খবর দেওয়া হলে ঘণ্টা চারেক পরে, এক সিভিক ভলান্টিয়ার এসে মৃতের মেয়ে ও দু’এক জন আত্মীয়ের সঙ্গে ভ্যানে চাপিয়ে দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করেন।

সোমবার আউশগ্রাম ১-এর বিডিও চিত্তজিৎ বসু বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। মৃতের করোনা পরীক্ষা না করিয়ে কী ভাবে তিনি আক্রান্ত বলে গুজব ছড়াল, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ শ্মশানযাত্রীরা আপাতত স্বেচ্ছায় কয়েকদিন নিভৃতবাসে থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থাও করবে প্রশাসন। আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ধীমান মণ্ডল বলেন, ‘‘যেহেতু ওই ব্যক্তি চিকিৎসাধীন ছিলেন না, তাই ঠিক কী কারণে মারা গিয়েছেন তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে যে সমস্ত ব্যক্তি তাঁর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করাতে বলা হবে।’’

মৃতের ছোট মেয়ের দাবি, বাবার দাহকার্যে আত্মীয় বা পড়শিদের সে ভাবে সাহায্য পাননি তিনি। এমনকি, পুরোহিতও শ্মশানে গিয়ে কাজ করাতে চাননি বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘ভিডিয়োয় পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ শুনে বাবার মুখাগ্নি করেছি। করোনা আক্রান্ত না হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ল জানি না।’’ আর এক আত্মীয়ের অভিযোগ, ‘‘দু’-এক জন আমাদের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পাড়ার অন্যরা নিষেধ করেন।’’ তবে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার পরে, তৃণমূলের স্থানীয় দিগনগর ২ অঞ্চল সভাপতি দেবাঙ্কুর চট্টোপাধ্যায়-সহ জনা চারেক গ্রামবাসী এগিয়ে আসেন বলে জানা গিয়েছে। দেবাঙ্কুরবাবু বলেন, “গ্রামে সাধারণত কেউ মারা গেলে ৬০-৭০ জন শ্মশানযাত্রী হন। এ ক্ষেত্রে কেউ এগিয়ে না আসায় পরিবারটি আতান্তরে পড়ে। বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক।’’

দিগনগর ২ পঞ্চায়েত প্রধান স্বরস্বতী মুর্মু বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথে ওই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন শুনেছি। পরে করোনা আতঙ্কে দেহ দাহ করা নিয়ে একটা সমস্যা হয়। এ ধরনের গুজব যাতে না ছড়ায় তার জন্য প্রচার চালানো হবে।’’ স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেই ওই ব্যক্তির মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Old Man Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE