Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Customer

৬০ শতাংশ ক্রেতা কমেছে বাজারে, দাবি

যাঁদের জন্য এত আয়োজন সেই ক্রেতাদের দেখা মেলেনি এ দিন, জানান আসানসোলের বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী বিমল মেহারিয়া।

বার্নপুরে জামাকাপড়ের একটি দোকানে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

বার্নপুরে জামাকাপড়ের একটি দোকানে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০৭:১৬
Share: Save:

পুজোর আগে ছুটির দিন বলতে মাঝে আর মাত্র তিনটি রবিবার। কিন্তু এ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়ায়নি শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বাজারগুলি, দাবি ব্যবসায়ীদের। তাঁদের আশা ছিল, শুক্রবার, ২ অক্টোবর ছুটির দিনে বাজারে কিছুটা হলেও ভিড় হবে। কিন্তু ক্রেতারা সেই আশায় জল ঢেলেছেন বলে দাবি।

কোভিড-পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য কিছু স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি জানান, ক্রেতাদের ভিড় যাতে না হয়, তা দেখতে হবে বিক্রেতাদের। ‘মাস্ক’ ছাড়া, দোকানে ক্রেতাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দোকানের মূল দরজায় রাখা থাকছে স্যানিটাইজ়ার ও থার্মাল স্ক্রিনিং যন্ত্র।

কিন্তু যাঁদের জন্য এত আয়োজন সেই ক্রেতাদের দেখা মেলেনি এ দিন, জানান আসানসোলের বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী বিমল মেহারিয়া। তিনি বলেন, ‘‘এ সময় বাজার তুঙ্গে ওঠে। কর্মীরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে যান। কিন্তু এ বার সে সবের ছিঁটেফোটাও নেই। গতবারের তুলনায় ক্রেতার আনাগোনা কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, আর যে ক’টা দিন বাকি, তাতে আর বড় জোর ১০ শতাংশ ক্রেতা বাড়তে পারে। আসানসোল বাজারেরই অন্য এক ব্যবসায়ী জানান, এ বার যা পরিস্থিতি, তা পুজোর ফ্যাশনও লাটে উঠেছে। একই ছবি বার্নপুরেও। সেখানের বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী ভক্ত দত্ত বলেন, ‘‘গতবারের তুলনায় এ বার ক্রেতার সংখ্যা অনেকটাই কম। তবুও চেষ্টা করছি, ক্রেতার চাহিদা বুঝে নানা ধরনের পোশাক রাখার।’’ আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন বাজারগুলিতে এ সময়ে ভিড় জমান লাগোয়া রাজ্য ঝাড়খণ্ডের ক্রেতারাও। এ বারও তাঁদেরও দেখা মেলেনি, জানান বরাকরের ব্যবসায়ী

রামমোহন ভড়।

বাজারের এই ছবির জন্য ব্যবসায়ীরা করোনা-পরিস্থিতিকেই দায়ী করছেন। তাঁদের মতে, ক্রেতার হাতে নগদ নেই। তা ছাড়া, বাড়ির বাইরে বেরোতেও ভয় পাচ্ছেন অনেকে। পাশাপাশি, গণ-পরিবহণ এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। আবার অনেকেই গণ-পরিবহণ এড়াতেও চাইছেন। আসানসোল, বার্নপুরের মূল বাজারে সাধারণত রানিগঞ্জ, কুলটি, রূপনারায়ণপুর, জামুড়িয়া থেকে ক্রেতারা আসেন। সেই ক্রেতাদের অনেকেই জানান, করোনা সংক্রমণের ভয়ে বাসে, অটোয় চাপছেন না। এক ক্রেতা বলেন, ‘‘পুজোর বাজার অন্য বছর হবে। এ বার সব তুলে রেখেছি।’’ শুধু বাজার নয়, একই ছবি বিভিন্ন শপিং মল কর্তৃপক্ষেরও। আসানসোল স্টেডিয়াম লাগোয়া মলের একটি দোকান মালিক প্রবীণ খেমটা বলেন, ‘‘এ বার ভিড় কার্যত নেই।’’

মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে আসানসোল, বরাকর, নিয়ামতপুরের বাজারের ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের থেকে। অশোক দাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘সাধারণত পুজোর ১৫ দিন আগে থেকে আমাদের বাজারে ভাল কেনাকাটা হয়। এ বার কী হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট আশঙ্কায় আছি।’’ তবে নিয়ামতপুরের অভিষেক কুশওয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘সাধারণত বৃহস্পতিবার করে আমাদের বাজারটা ভাল হয়। গত বৃহস্পতিবার ব্যবসা ভাল হয়েছিল। এখন দেখা যাক, কী হয়। কোলিয়ারির বোনাস হলে, সাধারণ ভাবে বাজার জমে ওঠে।’’

তবে, এর মধ্যেও ইতিউতি দু’-চারজন ক্রেতা দেখা গেল। তাঁদেরই একজন চিকিৎসক শান্তারাম বারিক। তিনি বলেন, ‘‘দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতেই আসতে হয়েছে। যতটা সম্ভব সুরক্ষাবিধি মেনে ভিড় এড়িয়ে বাজার করছি। এ ভাবেই সবাই

বাজার করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Customer Business
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE