প্রতীকী ছবি
দফায়-দফায় এলাকায় ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। কিন্তু লালারসের নমুনার পর্যাপ্ত পরীক্ষার এখনও অভাব রয়েছে জেলায়। তবে মাঝে দিন দু’য়েক নমুনা সংগ্রহ কম হওয়ায় জমে থাকা অনেক নমুনা পরীক্ষা করা গিয়েছে বলে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, দু’দিন আগেও প্রায় এক হাজার নমুনা জমেছিল। গত দু’দিন ধরে সেগুলি পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর জন্য বর্ধমান মেডিক্যালে ‘ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি’ (ভিআরডিএল) খোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আরও একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের দাবি জানানো হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আগে যেখানে দিনে গড়ে বারোশো-তেরোশো নমুনা সংগ্রহ হচ্ছিল, সেখানে গত দু’দিনে শ’তিনেক করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় জানান, ‘ব্যাকলগ’ কাটাতে নমুনা সংগ্রহের পরিমাণ কমানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসন, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লির মতো পাঁচটি রাজ্য ছাড়া, অন্য রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে উপসর্গ থাকলে তবেই লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তাতেই নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা কমছে। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘যে সব পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে উপসর্গ মিলছে, তাঁদের নমুনাই পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে। তাতে পরীক্ষার চাপ অনেকটা কমবে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ১৩,৭৮৩ জনের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। তার মধ্যে ৮,৯২৯ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনিবার রাত পর্যন্ত ৭৭টির রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছে (জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯২)।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, নমুনা জমে থাকায় রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে। দেখা গিয়েছে, নমুনা সংগ্রহের সাত-দশ দিন পরে, রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে তিনটি যন্ত্রে পরীক্ষা হচ্ছে। এ ছাড়া, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও কাঁকসার বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা হচ্ছে।
গত দু’সপ্তাহ ধরে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার ঢল বেড়েছে। নমুনা সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ‘কিয়স্ক’ বসেছে, ‘মোবাইল কিয়স্ক’ চালু হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রচুর নমুনা জমে থাকছে। বর্ধমান মেডিক্যালে ‘সিবি-ন্যাট’, ‘ট্রু-ন্যাট’, ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করেও গড়ে পাঁচশোর বেশি নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে না। ‘পুল টেস্ট’ করেও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো যাচ্ছে না বলে দাবি আধিকারিকদের। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের এক কর্তা বলেন, “দু’দিন নমুনা কম আসায় জমে থাকা নমুনাগুলি পরীক্ষা করা গিয়েছে।’’
প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মনে করছেন, ‘ভিআরডিএল’ এবং নতুন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র পাওয়া গেলে সমস্যা অনেকটা মিটবে। রিপোর্টও তাড়াতাড়ি মিলবে। শ্রমিকদের অযথা নিভৃতবাস কেন্দ্রে রাখারও দরকার হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy