তখনও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। সোমবার কাঁকসার গোপালপুর পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র
স্মারকলিপি দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল কাঁকসার গোপালপুর এলাকায়। সোমবারের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে গোপালপুরের করমডাঙা আদিবাসী গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা পঞ্চায়েত কার্যালয়ে যান। অভিযোগ, সেই সময়ে পঞ্চায়েতের কর্মীরা তাঁদের বেধড়ক মারধর করেন।
পঞ্চায়েতের তরফে পাল্টা দবি করা হয়, স্মারকলিপি দিতে আসা লোকেরাই পঞ্চায়েত কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান স্মারকলিপি দিতে যাওয়া লোকেরা। খবর পেয়ে কাঁকসা থানার পুলিশ যায়। আদিবাসী গাঁওতার কাঁকসার আহ্বায়ক সুনীল সোরেন বলেন, ‘‘আদিবাসীদের উপরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হামলা হচ্ছে। এ দিনও একই ঘটনা ঘটেছে। দোষীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।’’ রাত ৮টা নাগাদ পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। এসিপি (কাঁকসা) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত বলেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপালপুর পঞ্চায়েতের গোপালপুর থেকে সারেঙ্গা গ্রামে যাওয়ার একটি মোরামের রাস্তা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল রয়েছে। সে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এ দিন করমডাঙা আদিবাসী গ্রামের জনা বারো বাসিন্দা পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দিতে যান। অভিযোগ, সে সময়ে পঞ্চায়েত সদস্য, কর্মীরা গেট বন্ধ করে তাঁদের মারধর করেন। কোনও মতে কয়েকজন বাইরে বেরিয়ে এলে গোপালপুরের কিছু বাসিন্দা ফের তাঁদের উপরে হামলা করেন বলে অভিযোগ। ওই আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, লাঠি, বাঁশ নিয়ে তাঁদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে। দু’পক্ষের ঝামেলায় আহত হন কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলের রমেন মণ্ডল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, গোপালপুর পঞ্চায়েতের পাশে থাকা দোকান বন্ধ করে দেন মালিকেরা। খবর পেয়ে এলাকায় যায় পুলিশ বাহিনী।
তখনকার মতো সমস্যা মিটে গেলেও কিছু পরে করমডাঙা গ্রাম থেকে বহু বসিন্দা তীর, ধনুক, টাঙি, বাঁশ নিয়ে গোপালপুর পঞ্চায়েতের কাছে হাজির হন। পঞ্চায়েতের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, যাঁরা তাঁদের গ্রামের বাসিন্দাদের উপরে হামলা করেছে তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় পঞ্চায়েত প্রধান-সহ বেশ কিছু কর্মী তাঁদের গ্রামের কয়েকজনকে মারধর করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় যান এসিপি (কাঁকসা) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও জনতা গোপালপুর পঞ্চায়েতের গেটের বাইরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। পরে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে।
তৃণমূল পরিচালিত গোপালপুর পঞ্চায়েতের প্রধান জয়জিৎ মণ্ডলের দাবি, ‘‘স্মারকলিপি দিতে আসার সময়ে ওঁদের বলা হয়, কম সংখ্যক লোককে ভিতরে আনতে। কিন্তু শ’খানেক মানুষজন পঞ্চায়েতের ভিতরে চলে আসেন। বাধা দিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্মীদের উপরে চড়াও হন তাঁরা।’’ যদিও পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযোগকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy