—ফাইল চিত্র।
জাতিগত শংসাপত্র বিলি নিয়ে ‘তোড়জোড়’ শুরু হয়েছে জেলায়। প্রশাসনের এই ‘তৎপরতা’কে ঘিরে প্রশ্ন তুলেছেন জেলাবাসীর একাংশ। কারণ, জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সেখানে যাতে জাতিগত শংসাপত্র বিলি নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়, সে জন্য আগে থেকে জেলা জুড়ে বিশেষ শিবির করে তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা। যদিও জেলা প্রশাসনের দাবি, এই কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত।
মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে বার বার বলে থাকেন, আবেদনকারীর পরিবারের কোনও সদস্যের যদি জাতিগত শংসাপত্র থাকে, তা হলে তাঁকে এক মাসের মধ্যে শংসাপত্র দিতে হবে। সম্প্রতি বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকেও তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আবেদনকারীর পরিবারের কোনও এক জনেরও যদি শংসাপত্র থাকে, তবে তাঁকে দ্রুত জাতিগত শংসাপত্র দিতে হবে। ফেলে রাখা যাবে না।’
যদিও আবেদনের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও শংসাপত্র না মেলার অভিযোগ এখনও উঠছে। পরিবারের এক জনের শংসাপত্র থাকলেও শংসাপত্র পাচ্ছেন না আবেদনকারী, এমন বহু অভিযোগ ওঠে। যেমন, রাজবাঁধ কলেজ পাড়ার বাসিন্দা নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারের মোট ১৫ জনের শংসাপত্র আছে। কিন্তু আমার ও ছেলের নেই। আবেদন করেছি। ১৯৫১ সালের দলিল চাওয়া হয়েছে। দিতে পারিনি। শংসাপত্রও পাইনি।’’
প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, অনেক সময় ঠিক যোগাযোগের (মিস কমিউনিকেশন) অভাবে জাতিগত শংসাপত্র পাওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হয়। সে জন্য বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়। যাতে বাসিন্দারা নিজের নিজের এলাকার শিবিরে গিয়ে সহজেই আবেদন করতে পারেন। সে ভাবেই রবিবার সকাল ১১টা থেকে জেলার ৪৩টি জায়গায় বিশেষ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। রানিগঞ্জে ১১টি, জামুড়িয়া, বারাবনি, সালানপুরে তিনটি করে, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও কাঁকসা ব্লকে ছ’টি করে এবং অণ্ডালে পাঁচটি শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। এর ফলে সহজেই জাতিগত শংসাপত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত সেগুলি খতিয়ে দেখে শংসাপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করে হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারির পরে এ বার ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জেলায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসার কথা। দুর্গাপুরে বৈঠক ও সার্কিট হাউসের উদ্বোধন করার কথা। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জাতিগত শংসাপত্রের বিষয়ে খোঁজ নিতে পারেন বলে মনে করছেন প্রশাসনের একাংশ। যদিও প্রশাসনের এক আধিকারিক দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সঙ্গে বিশেষ জাতিগত শংসাপত্র শিবিরের কোনও যোগ নেই। আগে থেকেই এই কর্মসূচি ঠিক ছিল।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে অনেকের অভিযোগ আছে। সময়ে তা না মেলায় অনেকেই সমস্যায় পড়েন। তাই মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে এই বিশেষ শিবিরকে ঘিরে তাঁদের মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy