Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অস্ত্রোপচারে বেরোল বিন, সুস্থ সাত মাসের জেসিকা  

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে বীরভূমের সাঁইথিয়ার বাসিন্দা জ্যোৎস্নারানি দীপ শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা সাত মাসের মেয়ে জেসিকাকে নিয়ে সিউড়ি হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে বর্ধমান মে়ডিক্যালে আসেন। সঙ্গেসঙ্গেই শিশু বিভাগে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয় তাকে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

শ্বাসনালিতে আনাজের টুকরো ঢুকে যাওয়া সাত মাসের শিশুর অস্ত্রোপচার হয়েছিল গত সোমবার সন্ধ্যায়। আনাজের টুকরোটি বের করার পরে বর্ধমান মেডিক্যালেই ছিল শিশুটি। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যায় সে। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ কৌস্তভ নায়েক বলেন, “শিশুটি ভাল আছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে বীরভূমের সাঁইথিয়ার বাসিন্দা জ্যোৎস্নারানি দীপ শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা সাত মাসের মেয়ে জেসিকাকে নিয়ে সিউড়ি হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে বর্ধমান মে়ডিক্যালে আসেন। সঙ্গেসঙ্গেই শিশু বিভাগে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকেরা জানান, শিশুটিকে ‘পিকু’য় (পেডিয়াট্রিক ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অক্সিজেনের মাত্রা ৪০ শতাংশের বেশি উঠছিল না। তখন ইএনটি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা এসে দেখেন, শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে ইএনটি বিভাগ জানায়, জেসিকার শ্বাসনালিতে কিছু আটকে রয়েছে। সে জন্য অক্সিজেন ঠিকমতো ঢুকছে না।

এর পরেই ওই দুই বিভাগের চিকিৎসকেরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সাত জনের একটি মেডিক্যাল দল গঠন করেন। অস্ত্রোপচার করে বের করা হয় আনাজের টুকরোটি। জ্যোৎস্নারানিদেবীর দাবি, “ঘরে বিন কাটা হচ্ছিল। পাশেই শুয়ে ছিল জেসিকা। সেই সময় কোনও ভাবে একটা টুকরো খেয়ে ফেলে সে। তারপরেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘যে ভাবে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়ে আমার মেয়েকে বাঁচিয়ে তুললেন চিকিৎসকেরা, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’’

ইএনটি বিশেষজ্ঞ গণেশচন্দ্র গায়েনের দাবি, “এ রাজ্যের সরকারি বা বেসরকারি কোনও হাসপাতালই এত দ্রুততার সঙ্গে শিশুটির অস্ত্রোপচার করত না। আবার দেরি করে অস্ত্রোপচার হলে শিশুটি বেঁচে থাকলেও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ত। আমরা রিজিড ব্রঙ্কোস্কোপির মাধ্যমে শুধু এই শিশুটি নয় পুজোর পর থেকে অন্তত ১২টি শিশুর চিকিৎসা করেছি। প্রত্যেকেই ভাল আছে।’’

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “এ সব ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে মেডিক্যাল দল গঠন করে চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার করতে হয়। সামান্য দেরি হলেই রোগীর সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যায়। আমাদের চিকিৎসকরা দ্রুততার সঙ্গে নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE