আমূল গ্রামে চলছে পুজো। নিজস্ব চিত্র।
মাঘ মাসে দুর্গাপুজো! তবে শারদীয়ার সঙ্গে এই পুজোর পার্থক্য দেবী প্রতিমার অবয়বে, রীতিনীতিতে। এ ভাবেই প্রায় তিন শতাব্দী ধরে অসময়ে দুর্গা পুজোর আনন্দে মাতছেন কাটোয়া ২ ব্লকের আমূল গ্রাম ও লাগোয়া বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। আর সেই আনন্দে ভেঙে গিয়েছে জাতি-ধর্মের আগলও।
জনশ্রুতি, গ্রামের নিধিরাম চক্রবর্তী নামে এক বাসিন্দা স্বপ্নাদেশ পেয়ে স্থানীয় একটি খাল থেকে তিনটি পাথরের মূর্তি নিয়ে আসেন। সেগুলিকেই দেবী জ্ঞানে শুরু হয় পুজো। পুজোর আয়োজকেরা জানান, চণ্ডীকে এখানে দেবী দুর্গা হিসেবে পুজো করা হয়। এ বছর রবিবার থেকে শুরু হয়েছে চার দিনের পুজো। শেওড়াফুলির প্রণবেশ রায়ের দান করা ১২ বিঘা জমিতে তৈরি হয় দেবী মন্দির। ওই জমিতেই বাস করেন মন্দিরের সেবাইতেরা। এখন অবশ্য শিলাখণ্ডে নয়, মাটির প্রতিমা গড়ে পুজো হয়।
তবে সেই প্রতিমার অবয়বে বিশেষত্ব রয়েছে। কী রকম? মন্দিরে গিয়ে দেখা গেল, প্রতিমার তিনটি হাত বড় এবং কাঁধের ডান দিকে তিনটি ও বাঁ দিকে চারটি ছোট্ট হাত রয়েছে। সিংহের জায়গায় রয়েছে ঘোড়া। চার দিনের পুজো এবং অঙ্গরাগ হলেও প্রতি বছর এখানে বিজয়া হয় না। একটি মূর্তিতেই পুজো হয় চার বছর।
সেবাইত শ্যামলচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ষোড়শ উপাচারে দেবী পূজিতা হন। দেবীর ভোগে থাকে মাগুর মাছ। পুজো উপলক্ষে এলাকায় এক সপ্তাহের মেলাও বসে গ্রামে। পুজোর দায়িত্বে রয়েছে আমূল সব্যসাচী যুবক সঙ্ঘও। ক্লাবের ছেলেরা যাত্রারও আয়োজন করে।
পুজো উপলক্ষে ভিড় জমান আশেপাশের বহু এলাকার বাসিন্দারাও। ধানবাদের সুমনা চৌধুরী, হালিশহরের সুমনা দত্তরা বলেন, ‘‘পুজোর এই ক’দিন গ্রামে না এলে ভাল লাগে না।’’ পুজোর এমন আনন্দে যোগ রয়েছে সম্প্রীতির সুরও। তাই বোধ হয় কওসর আলি মণ্ডল, রশিদ শেখরা বলেন, ‘‘দেবী পুজোকে কেন্দ্র করে এই ক’টা দিন আমরা সকলে মিলে আনন্দ করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy