Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Solar Eclipse

মেঘবেলায় এক ঝলক গ্রহণ-দর্শন

এ দিন দুর্গাপুর ও আসানসোলে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মিনিট দু’য়েকের জন্য মেঘ সামান্য সরতেই অনেকেরই চোখ যায় আকাশে।

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগে আকাশে চোখ।  ছবি: পাপন চৌধুরী

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগে আকাশে চোখ। ছবি: পাপন চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর ও কুলটি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৬:২০
Share: Save:

সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। সূর্যের বয়লগ্রাস গ্রহণ দেখা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন জেলার বাসিন্দারা। তবে, মিনিট কয়েকের জন্য আশাপূরণ ঘটেছে। আবার, গ্রহণ দেখতে পাননি বলে আক্ষেপ রাতের আকাশে ‘টেলিস্কোপ’ চোখে তারাদের উপরে নজরদারি চালানো সিপিএম নেতা গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেরই।

এ দিন দুর্গাপুর ও আসানসোলে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মিনিট দু’য়েকের জন্য মেঘ সামান্য সরতেই অনেকেরই চোখ যায় আকাশে। ততক্ষণে সূর্যের অনেকখানি ঢেকে গিয়েছে চাঁদের ছায়ায়। অনেকে ছবিও তোলেন। আধ ঘণ্টা পরে আরও এক বার মিনিট দু’য়েকের জন্য মেঘ সরেছিল। তবে ততক্ষণে সূর্যের উপর থেকে চাঁদের ছায়াও সরতে শুরু করে দেয়।

রবিবার দুর্গাপুরে সে ভাবে সমবেত হয়ে গ্রহণ দেখার ব্যবস্থা নজরে আসেনি। অনেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে গ্রহণ দেখবেন বলে সকাল থেকে প্রস্তুত হয়েছিলেন। আকাশ মেঘে ঢাকা। টিভিতে খবরের চ্যানেলে সকলের চোখ। রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই আকাশ মেঘে ঢাকা শুনে হতাশ হয়ে পড়েন অনেকে। তবে হালও ছাড়েননি কলেজ পড়ুয়া তানিয়া রায়দের মতো অনেকেই। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, আর বোধ হয় দেখা হল না। শেষমেশ অন্তত এক ঝলক দেখেছি।’’ ক্যামেরা নিয়ে সাইকেলে চড়ে সকাল থেকে দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন বিধাননগরের শ্যামল বসু। কেন এমনটা? তাঁর কথায়, ‘‘বিধাননগরে বৃষ্টি হলে সিটি সেন্টারে হয় না। বেনাচিতিতে বৃষ্টি হলে রায়ডাঙায় হয় না। তাই আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম, যদি কোনও জায়গা থেকে একটি বার মেঘ সরে যায়!’’ তিনি সফল হন গাঁধী মোড়ের কাছে আসতেই। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘গাঁধী মোড়ের কাছে হঠাৎ দেখি হাল্কা রোদ উঠল। সঙ্গে-সঙ্গে আকাশের দিকে তাক করি ক্যামেরা। পাঁচ-ছ’টি ছবিও তুলে ফেলি।’’

‘টেলিস্কোপে’ চোখ রেখে রাত জেগে গ্রহ-নক্ষত্রের উপরে নজরদারি চালানোটা অনেক দিনের অভ্যাস সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গবাবুর। সূর্যগ্রহণের মতো মহাজাগতিক ঘটনা তাঁর কাছে তাই ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’। গত বার ভাল করে সূর্যগ্রহণ দেখবেন বলে পাণ্ডবেশ্বর থেকে চলে গিয়েছিলেন আসানসোলে! এ বার তবে তিনি গ্রহণ দেখতে পাননি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘মেঘে ঢাকা আকাশ। তাই আর টেলিস্কোপে চোখ রাখিনি। আফশোস থেকে গেল।’’

তবে অন্য দৃশ্য ধরা পড়ল কুলটির মিঠানি গ্রামে। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজের গ্রামের ছেলেমেয়েদের গ্রহণ দেখানোর ব্যবস্থা করেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য কিংশুক মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মেঘ সরতেই যতটুকু পেরেছি গ্রামের খুদেদের সঙ্গে গ্রহণ দেখেছি।’’ বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সভাপতি শ্রীকান্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, বিধাননগরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেশ কয়েকজনকে, বিশেষ করে পড়ুয়াদের বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্ভাবন করা বিশেষ ধরণের চশমার মাধ্যমে গ্রহণ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। যদিও মেঘের জন্য সে ভাবে দেখা যায়নি। গ্রহণের সময় খাবার খাওয়া নিয়ে কুসংস্কার রয়েছে। তা দূর করতে গ্রহণের সময়ে চকোলেট বিলি করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Solar Eclipse Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE