Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

খনি-রেলের সম্পর্কের সন্ধান, সংরক্ষণ সীতারামপুরে

প্রায় দেড়শো বছর আগে এই স্টেশনটি তৈরি হয়। কয়লা পরিবহণের ক্ষেত্রে এই স্টেশন একসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ডিআরএম (আসানসোল) প্রশান্তকুমার মিশ্র জানান, একসময়ে এই স্টেশনে দেশের বৃহত্তম বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের শেড তৈরি করা হয়।

এই ভবনগুলিই সংরক্ষণ করার কথা জানিয়েছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন। ছবি: পাপন চৌধুরী

এই ভবনগুলিই সংরক্ষণ করার কথা জানিয়েছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন। ছবি: পাপন চৌধুরী

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০০:২৪
Share: Save:

পুরনো বেশ কিছু ভবন। তার সঙ্গে লেগে রয়েছে এই শিল্পাঞ্চল তথা ভারতীয় রেলের এক দীর্ঘ ইতিহাস। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সীতারামপুর রেলস্টেশন লাগোয়া সেই ভবনগুলি খণ্ডহরে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি সেগুলিই সংরক্ষণের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন।

প্রায় দেড়শো বছর আগে এই স্টেশনটি তৈরি হয়। কয়লা পরিবহণের ক্ষেত্রে এই স্টেশন একসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ডিআরএম (আসানসোল) প্রশান্তকুমার মিশ্র জানান, একসময়ে এই স্টেশনে দেশের বৃহত্তম বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের শেড তৈরি করা হয়। তৈরি হয়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা সরবরাহকারী ইয়ার্ড। এই মুহূর্তে সে সবের আর চিহ্নও নেই। রেলকর্তারা জানান, এগুলি তৈরি হওয়ার কারণ, রানিগঞ্জ, কুলটি, আসানসোল, বরাকর, ডিসেরগড়ে একসময় বিপুল কয়লার ভাণ্ডারের উপস্থিতি। সেই কয়লা প্রথমে নৌকায় পরিবহণ করা হত। পরে কয়লা পরিবহণের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়ান রেল কোম্পানি ১৮৬৫-তে রানিগঞ্জ পর্যন্ত রেল লাইন বসায়। সেই লাইনই ১৮৭১-এ সীতারামপুর হয়ে মুঘলসরাই পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বছর কয়েক পরে সীতারামপুর থেকে একটি লাইন লক্ষ্মীসরাই পর্যন্ত যায়। সেই সঙ্গে সীতারামপুর রেলস্টেশনের গুরুত্বও বাড়ে।

স্টেশনকে কেন্দ্র করে বাণিজ্য বাড়তে থাকায় এখানে তৎকালীন রেল কোম্পানির পদস্থ কর্তাদের বাসস্থান থেকে অতিথিশালা ও বিনোদনকেন্দ্র তৈরি করা হয়। বিনোদনকেন্দ্রটির পরে নামকরণ হয় টেগোর ইনস্টিটিউট। স্টেশনের পূর্ব প্রান্তে একটি রেল কলোনিও গড়ে ওঠে। স্টেশনের অতীত চিহ্নগুলি বর্তমানে না থাকলেও বহু ট্রেন দাঁড়ায়। সম্প্রতি স্টেশন ও রেল কলোনির উন্নয়নের জন্য এলাকা পরিদর্শনে এসে শতাধিক বছরের পুরনো ভগ্নপ্রায় ভবনগুলি দেখতে পান ডিআরএম (আসানসোল)।

এর পরেই মুখ্য ইয়ার্ড মাস্টারের বাংলো-সহ পদস্থ আধিকারিকদের চারটি ভবন পুনরুদ্ধার করে হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষণের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশান্তবাবু। এগুলির একটিতে ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ তৈরি হবে। প্রশান্তবাবুর কথায়, ‘‘ভারতীয় রেলের অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্যই উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পরামর্শে এই কাজ করছি আমরা।’’

রেলকর্তারা জানান, ভারতীয় রেলের অন্যতম প্রাচীন বিনোদনকেন্দ্রটিকে ফের সাজিয়ে তুলে একটি সংগ্রহশালা করার পরিকল্পনা হয়েছে। যেখানে কয়লাখনির সঙ্গে রেলের নিবিড় সংযোগ ও এই স্টেশনের প্রাচীন ইতিহাসের বর্ণনা থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE