Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Elephant

খেতে দাঁতাল, জমল ভিড়ও

প্রায় একশো জনের হুলা-পার্টি মশাল জ্বেলে হাতিটিকে ধাওয়া করে।

বোরো ধানের খেতে হাতি, গলসির জাগুলিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

বোরো ধানের খেতে হাতি, গলসির জাগুলিপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গলসি শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫০
Share: Save:

দিনভর ধান খেতে দাপিয়ে বেড়াল দাঁতাল। ‘লকডাউন’-এর মাঝে হাতি দেখতে ভিড়ও হল বেশ কিছু এলাকায়। বহু ফসল নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরাও।

শুক্রবার সাতসকালে দামোদর পেরিয়ে হাতি ঢুকে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ ব্লকের পারাজ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে। দিনভর জাগুলিপাড়া, রাইপুর, শিড়রাই ও পোতনার জমিতে দাপিয়ে বেড়ায় হাতিটি। গ্রামবাসীর অনুমান, বৃহস্পতিবার রাতেই দলছুট হাতিটি বাঁকুড়া থেকে এলাকায় ঢোকে। হাতি আসার খবর ছড়াতেই রাইপুর সেচ ক্যানালের কাছে ভিড় জমান আশপাশের গ্রামের লোকজন। সামাজিক দূরত্বর বিধি উড়িয়েই শ’দেড়েক লোকের জমায়েত হয়। মুখে ‘মাস্ক’ও ছিল না বেশির ভাগের। যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েতের দাবি, হাতিটিকে বিরক্ত না করতে ও ভিড় না জমানোর কথা বলা হয়েছে গ্রামে।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতিটি বাঁকুড়ার সোনামুখী হয়ে দামোদর পেরিয়ে গলসি ১ ব্লকের কসবা এলাকা দিয়ে পূর্ব বর্ধমানে ঢোকে। সেখান থেকে রণডিহা সেচ ক্যানালের বাঁধ ধরে সকালে পৌঁছয় জাগুলিপাড়া গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে হাতিটি ধান খেতে নামে বলে দাবি। খবর পেয়ে জাগুলিপাড়া এলাকায় পৌঁছন পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরা।

প্রায় একশো জনের হুলা-পার্টি মশাল জ্বেলে হাতিটিকে ধাওয়া করে। শূন্যে গুলিও ছোড়া হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু বিকাল পর্যন্ত হাতিটিকে জাগুলিপাড়া, রাইপুর ও শিড়রাই এই তিন গ্রামের মাঝের মাঠ থেকে নড়ানো যায়নি। স্থানীয়দের দাবি, কখনও রাইপুর গ্রামের পাশে, কখনও জাগুলিপাড়ার দিকের মাঠে ঘোরাফেরা করছিল হাতিটি।

জাগুলিপাড়া গ্রামের চাষি আশরফ মিদ্দা, মোল্লা নৈসাদদের দাবি, “হাতিটির পায়ে পিষে বেশ কয়েক বিঘা বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। প্রতি বছরই এমন সময় এলাকায় হাতি ঢুকে ধানের ক্ষতি হয়।” পারাজ পঞ্চায়েতের সদস্য রহমত মোল্লার আশ্বাস, “যে সমস্ত চাষির ক্ষতি হয়েছে, তাঁরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান সরকার সেটা দেখবে।” বন দফতরের দুর্গাপুর রেঞ্জের এক আধিকারিকের দাবি, মাঠ ভরা ধান তাই ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।

মাঝেমধ্যেই বাঁকুড়া থেকে দামোদর পেরিয়ে গলসির কসবা, লোয়া-সন্তোষপুর, বীরিংপুর এলাকায় হাতি ঢুকে পড়ে। হাতিদের গতিবিধি নজরে রাখতে দামোদরের তীরে গোহগ্রাম, শিল্ল্যা ও কসবায় তিনটি ‘ওয়াচ টাওয়ার’ নির্মাণ করে বন দফতর। কিন্তু বনকর্মীদের নজর এড়িয়ে এলাকায় ফের হাটি ঢুকে পড়ায় আতঙ্কও ছড়িয়েছে। জেলা বনাধিকারিক দেবাশিস শর্মা বলেন, “হাতিটিকে তাড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে কর্মীরা। আশা করি, রাতের মধ্যে হাতিটিকে বাঁকুড়ায় ফেরত পাঠানো যাবে।’’ নজরদারি বিষয়ে তাঁর দাবি, ‘লকডাউন’-এর কারণে নজরমিনারে কোনও কর্মী নেই। তবে হাতি ঢোকার খবর পাওয়া মাত্রই মোবাইলে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে।

গলসি ১-এর বিডিও বিনয়কুমার মণ্ডল বলেন, “হাতিটিকে বাঁকুড়ায় ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছেন বনকর্মীরা। পুলিশকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। হাতিকে যাতে কেউ বিরক্ত না করেন, সেটাও স্থানীয় পঞ্চায়েতকে দেখতে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Wildlife
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE