Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফসল বাঁচানো যাবে কি, সংশয়ে চাষিরা

বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সপ্তাহ দুয়েক আগেই ফের বীজতলা তৈরি করতে হয়েছিল। কিন্তু জলে যেতে বসেছে সেই পরিশ্রমও। টানা বৃষ্টিতে আমন ধান ও সব্জির চাষ সমস্যার মুখে পড়েছে জেলা জুড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৫ ০১:০৭
Share: Save:

বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সপ্তাহ দুয়েক আগেই ফের বীজতলা তৈরি করতে হয়েছিল। কিন্তু জলে যেতে বসেছে সেই পরিশ্রমও।

টানা বৃষ্টিতে আমন ধান ও সব্জির চাষ সমস্যার মুখে পড়েছে জেলা জুড়ে। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, সারা বছরে যেখানে ১২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি প্রয়োজন, সেখানে এ বার শুধু জুলাইয়েই তার পরিমাণ প্রায় ৬০০ মিলিমিটার।

চাষিদের দাবি, জুলাইয়ের মাঝামাঝি জেলার বহু ব্লকেই ধানের বীজতলা ও সব্জি নষ্ট হয়ে যায়। কালনা-কাটোয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বহু চাষির হাতে জলদি ধানের বীজ তুলে দেয় জেলা কৃষি দফতর। চাষিরা জানান, সেই বীজ মাঠে ফেলাও হয়। কিন্তু তার পরেই ফের শুরু হয়েছে বৃষ্টি। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষিজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। চাষিরা জানান, জল ক্রমশ বেড়ে চলেছে। নানা জায়গায় কৃষিজমি দিয়েই নৌকা চলছে। তা থেকে চাষিদের আশঙ্কা, পরে জল নেমে গেলেও বেশির ভাগ চাষই নষ্ট হয়ে যাবে।

বিভিন্ন মহকুমা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার জেলা কৃষি দফতর একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। তা এ দিনই পাঠানো হয়েছে রাজ্য কৃষি দফতরে। জেলা কৃষি দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে জলের তলায় সব চেয়ে বেশি রয়েছে সদ্য জমিতে পোঁতা আমনের চারা, যার পরিমাণ ৭৮ হাজার ৬৫০ হেক্টর। তার মধ্যে বর্ধমান সদরেই রয়েছে ২৬০৫০ হেক্টর। এ ছাড়া কালনায় ৩৪২০০, কাটোয়ায় ১৭৪০০ হেক্টর ও দুর্গাপুরে ১০০০ হেক্টর জমি রয়েছে। জলের নীচে রয়েছে ৯৪৭০ হেক্টর জমির বীজতলা। এর মধ্যে বর্ধমান সদর মহকুমায় ২৬০০, কালনায় ৩২০০, কাটোয়ায় ৩৬০০ এবং দুর্গাপুরে ৭০ হেক্টর।

জেলা জুড়ে সব্জি খেত জলমগ্ন হওয়ার পরিমাণও কম নয়। কৃষি দফতরের হিসেবে তা ৮৪৯৫ হেক্টর। তার মধ্যে বেশির শুধু কালনা মহকুমায় ৩৯৪০ হেক্টর। পূর্বস্থলী ২ ব্লকেই তলিয়ে গিয়েছে ২৫০০ হেক্টর সব্জি খেত। এ ছাড়া বর্ধমান সদরে ২৫০০ হেক্টর জমি সব্জির খেত এখন জলের তলায়। জুলাইয়ের শেষ দিকে শুরু হয় পাট কাটার কাজ। এই পরিস্থিতিতে যা করে উঠতে পারেননি বেশির ভাগ পাটচাষিই। বহু জমিতে প্রায় সাত ফুট উচ্চতার পাট গাছ গলা পর্যন্ত ডুবে রয়েছে। কৃষি দফতরের হিসেবে, জেলায় পাট ডুবে রয়েছে ৬৩৩২ হেক্টর জমিতে, যার মধ্যে কালনাতেই ৬১৫২ হেক্টর।

জেলার এক কৃষি কর্তার কথায়, ‘‘টানা সাত দিন ধরে জমিতে ডুবে রয়েছে আমন ধানের বীজ তলা এবং সদ্য পোঁতা ধান চারা। জল কবে কমবে, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। তলিয়ে যাওয়া বেশির ভাগ বীজতলা এবং ধানচারা বেঁচে থাকার সম্ভবনা কম।’’ জেলার সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘জল ১৫ আগস্টের মধ্যে নেমে গিয়ে যদি জমি তৈরি হয়ে যায়, তাহলে শ্রী এবং ড্রামসিডারের মাধ্যমে জলদি ধানের চাষ সম্ভব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Farmers heavy rain land paddy rice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE