—প্রতীকী ছবি।
অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার অ্যাপেনডিক্সের অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন হাতুড়ে। পরে ব্লক হাসপাতালে আনলে জানা যায় মৃত্যু হয়েছে তিন মাসের ভ্রুণের। ভুল চিকিৎসার অভিযোগে আগেই ওই হাতুড়েকে গ্রেফতার করেছিল কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। ধরা হয়েছিল কাটোয়ার এক নার্সিংহোম মালিক ও দুই কর্মীকে। এ বার ওই হাতুড়ের বাবাকেও এই চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ধৃত বছর সাতষট্টির সনৎ বিশ্বাস ছেলের সঙ্গে মিলে রোগীদের শহরের নার্সিংহোমে নিয়ে যেতেন। সেখানে ভুল অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও করতেন। এমনকি, নিজের গাড়িতে সনৎবাবু রোগীদের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতেন বলেও জেনেছে পুলিশ।
২২ অক্টোবর কেতুগ্রামের কোজলসার বাসিন্দা জোৎস্না বিবি পেটে জ্বালা, ব্যথা নিয়ে আমগড়িয়ার হাতুড়ে চিকিৎসক কাব্যেন্দু বিশ্বাসের কাছে যান। ওই চিকিৎসক জানান, অ্যাপনডিক্স অস্ত্রোপচার না করলে গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু হতে পারে। তাঁর কথা মতো কাটোয়ার একটি বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করানোর পরে কাটোয়ার একটি অজ্ঞাত জায়গায় জোৎস্নার অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসার খরচ বাবদ ১২ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলেও ওই মহিলার দাবি। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর থেকে রক্তপাত শুরু হয় তাঁর। ফের ওই হাতুড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কান্দরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে বলেন। সেখানে গিয়ে জ্যোৎস্না জানতে পারেন, ভ্রুণটি মারা গিয়েছে। পরে কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসা হয় তাঁর। সেখানকার চিকিৎসক দাবি করেন, জোৎস্নার আদৌ অ্যাপেনডিক্সের অস্ত্রোপচার হয়নি এবং কাটোয়া আসার আগেই তার ভ্রুণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এরপরেই থানায় যান তিনি। ওই মহিলার কথা মতো কাটোয়ার ডাকবাংলো রোডের একটি নার্সিংহোমে তল্লাশি চালায় পুলিশ। মালিক ও দুই কর্মীকে ধরা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রাম থেকে রোগী ধরে শহরের কোনও নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে ভুল অস্ত্রোপচার করিয়ে টাকা হাতানোর চক্রে পুরোপুরি জড়িয়ে ছিলেন সনৎবাবু। প্রসূতিদের নিজের দায়িত্বে কাটোয়ায় আনার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতেন তিনি। তাঁর নিজের গাড়িও ব্যবহার করতেন। রোগীর কাছ থেকে নেওয়া টাকার একটা অংশ চালককে দেওয়া হত। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চালক রাজু শেখ পলাতক।
এ দিন ধৃতকে কাটোয়া আদালতে তোলা হলে ১২ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতের আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়ের দাবি, সনৎবাবু এক জন কবিয়াল। জেলা ও রাজ্য স্তরে একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেন। রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের নথিভুক্ত শিল্পী উনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy