Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

খেলার মাঠে গুলি, আহত দুই

বেড়ুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফকরুদ্দিন আহমেদের অভিযোগ, ‘‘সিপিএমের হার্মাদেরা গুলি চালিয়েছে।’’ কেতুগ্রামের নেতা তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তমাল মাঝির পাল্টা দাবি, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। তৃণমূল নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। মানুষ সব জানেন।’’

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০৩
Share: Save:

মেয়েদের ফুটবল ম্যাচ চলছিল মাঠে। তার মধ্যেই ঢুকে তৃণমূলের এক নেতাকে মারধর, তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। কিছুটা দূরে ওই নেতার শ্বশুরের দোকানে ঢুকেও মারধর, গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁর গায়ে গুলি না লাগলেও জখম হন দুই পথচারী। দু’জনেরই পেটে গুলি লেগেছে বলে জানা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের মোড়গ্রাম এলাকার ওই ঘটনায় তৃণমূলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ দেখছেন বিরোধীরা। যদিও তৃণমূলের দাবি, কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। সিপিএমের দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছে বলেও দাবি করেছেন দলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি। বেড়ুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফকরুদ্দিন আহমেদের অভিযোগ, ‘‘সিপিএমের হার্মাদেরা গুলি চালিয়েছে।’’ কেতুগ্রামের নেতা তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তমাল মাঝির পাল্টা দাবি, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। তৃণমূল নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। মানুষ সব জানেন।’’

পুলিশ জানিয়েছে, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এলাকা এখন শান্ত রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আহত বাবলু শেখ ও সুনীল মাঝিকে প্রথমে বোলপুর সিয়ান হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয় তাঁদের। দু’জনেই পাশের কুলুট গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নবান্ন উপলক্ষে বেড়ুগ্রামের মাঠে মহিলা দলের ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছিল। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ সাহিদুল্লা ওরফে উজ্জ্বল, বেড়ুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফকরুদ্দিন আহমেদ ওরফে বকুল, যুব তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি কাজি জহিরুল আলম ওরফে রাজ-সহ অনেকেই হাজির ছিলেন সেখানে। ফকরুদ্দিন আহমেদের অভিযোগ, বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ আচমকা মোড়গ্রাম থেকে জনা পাঁচেক দুষ্কৃতী খেলার মাঠে ঢুকে পড়ে। রাজকে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাধা দিলে ওরা পালিয়ে যায়। পরে কিছুটা দূরে মোড়গ্রামে রাজের শ্বশুর দুলু শেখের দোকানে ঢুকেও দুষ্কৃতীরা মারধর করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়।’’ দুলু শেখ বেঁচে গেলেও আহত হন ওই দু’জন।

তৃণমূলের একাংশের দাবি, পুরনো বিবাদের জেরেই এই ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, ‘‘রাজ ও দুলু শেখ আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী। দুষ্কৃতীরা ওদের মারতে এসেছিল। সাধারণ দু’জনের গায়ে গুলি লেগেছে বলে শুনেছি। আমাদের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’

গত দশ দিনের মধ্যে মাধবডিহিতে খুন হন তৃণমূল কর্মী অনিল মাঝি। রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সৈয়দ কলিমুদ্দিনের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে এলাকায় পরিচিত ছিলেন ছিলেন। গত শুক্রবার গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ইনসান মল্লিক। দলের উপরমহল থেকে বারবার দ্বন্দ্ব বন্ধের নির্দেশ এলেও পরপর খুন, গুলি চালানোয় প্রকাশ্যে আসছে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ইনসান খুনে অভিযোগও হয়েছে দলেরই এক নেতার নামে।

জেলা বিজেপি সভাপতির মন্তব্য (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গোলাগুলিতে সাধারণ মানুষ আহত হচ্ছেন। ওরা বাংলায় জঙ্গলের রাজত্বে কায়েম করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

burdwan Football Match TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE