এই শংসাপত্র ঘিরেই উঠেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
জীবিত মানুষকে মৃতের শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠল কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সুভাষচন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে। যাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল বুধবার তিনিই কালনা থানা ও মহকুমাশাসকের কাছে জানিয়েছেন, তিনি জীবিত রয়েছেন। সুভাষবাবু গোটা ঘটনাটি তাঁর বিরুদ্ধে শাসকদলের একাংশের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন।
এ দিন প্রশাসনকে লেখা চিঠিতে ওই পঞ্চায়েতের পাতিলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোসাম্মত রেবাকা নাসির বানু অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী আব্দুল কাদের জীবদ্দশায় তাঁকে না জানিয়ে তাঁর মালিকাধীন সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে চান। স্বামী তাঁকে না জানিয়েই তাঁর সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন বলে দাবি রেবাকার। তিনি অভিযোগ করেন, স্বামীর সঙ্গে এই ষড়যন্ত্রে শামিল হন তৎকালীন প্রধান। ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান একটি শংসাপত্র দেন। সেখানে বাংলার ১৪১৯ সালে ৩০ জ্যৈষ্ঠ রেবাকার মৃত্যু হয়েছে বলে লেখা হয়। সেই শংসাপত্রে তাঁর সমস্ত সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকার হিসাবে স্বামীর নাম লেখা হয়।
রেবাকার দাবি, পরে দেখা যায় তাঁর মালিকাধীন সম্পত্তি অন্য জন দখল করেছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানান, তাঁরা সম্পত্তি কিনেছেন। অভিযোগপত্রে রেবাকা জানান, গত ২৫ মার্চ জানতে পারেন, তিনি বেঁচে থাকা সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে লাভ করার জন্য প্রধান ওই শংসাপত্র দিয়েছিলেন। সম্প্রতি মৃত স্বামীর ফাইল থেকে ওই শংসাপত্র উদ্ধার করেছেন তিনি।
মহিলার আরও অভিযোগ, সোমবার এ ব্যাপারে সুভাষবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি খুনের হুমকি দেন। তিনি প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। অভিযোগকারিণীর ছেলে সাইফুল রহমানের অভিযোগ, ‘‘আমরা দু’ভাই কাজের সুবাদে বাইরে থাকায় সেই সুবিধা নিয়েছিল বাবা। প্রধানের কাছ থেকে শংসাপত্র নিয়ে পরিবারের ক্ষতি করে। তৎকালীন প্রধান জানতেন, মা জীবিত। তা সত্ত্বেও অন্যায় সুবিধা নিতে তিনি এই কাজ করেছিলেন।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সুভাষবাবুর অবশ্য দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি। সে জন্য বদলা নিতেই শাসকদলের প্ররোচনায় এমন অভিযোগ করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ২০১৬ সালে ওই মহিলার স্বামী পঞ্চায়েতে গিয়েছিলেন। তিনি সঙ্গে অন্য এক জনকে নিয়ে গিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তির স্ত্রী মারা গিয়েছেন বলে শংসাপত্র চেয়েছিলেন। কাজের চাপের মধ্যে তাড়াহুড়োয় শংসাপত্রটিতে তিনি সই করে দেন। পরে পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে শংসাপত্রটি ফেরত চাইলেও তাঁরা তা দিতে চাননি বলে প্রাক্তন প্রধানের দাবি।
কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতির অভিযোগে সুভাষবাবুকে আগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলিও প্রশাসনকে জানানো হবে।’’ মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিশ ঢালি জানান, অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy