Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

৩ হাজার টাকা ধার দিয়ে ফেরত না পাওয়ায় বন্ধুকে ‘খুন’!

বাড়ির পাশে আমবাগান থেকে তরুণের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তিন হাজার টাকার জন্য বন্ধুকে সে খুন করেছে বলে জেরায় জানিয়েছে, দাবি পুলিশের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৪৭
Share: Save:

বাড়ির পাশে আমবাগান থেকে তরুণের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তিন হাজার টাকার জন্য বন্ধুকে সে খুন করেছে বলে জেরায় জানিয়েছে, দাবি পুলিশের।

কালনার সুলতানপুর পঞ্চায়েতের রসুলপুর গ্রামে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে আমবাগানে বছর আঠারোর রোহন শেখের ঝুলন্ত দেহ মেলে। তাঁর বাবা আসরফ আলি শেখ জানান, ছেলে বাড়িতে একা ছিল। তিনি রাতে বাড়ি ফিরে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে ফোন করেন। পাশে আমবাগানে ফোন বেজে ওঠার শব্দ পেয়ে গিয়ে গাছে ছেলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। ছেলের ল্যাপটপ বেপাত্তা হয়ে যাওয়া, দেহ মাটিতে ঠেকে থাকার মতো কিছু বিষয় নিয়ে সন্দেহ হয় তাঁদের। পুলিশকেও সে কথা জানান তাঁরা।

পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে ঘটনার দিন রোহন ও তাঁর বন্ধু, ওই এলাকারই বাসিন্দা শাহিদ নবি শেখ একসঙ্গে মদ্যপান করেছিল বলে জানা যায়। বৃহস্পতিবার রোহনের বাবা খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। শাহিদকে জেরা করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় ভেঙে পড়ে বছর আঠারোর শাহিদ খুনের কথা স্বীকার করে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেহটি যে ভাবে ছিল তা দেখেই সন্দেহ হয়। তদন্তে মৃতের সঙ্গে এই তরুণের ঘনিষ্ঠতার কথা জানা যায়। তাকে জেরা করতেই তিন হাজার টাকার জন্য খুনের ঘটনা সামনে এসেছে।’’

পুলিশ জানায়, তদন্তে জানা গিয়েছে, সমবয়সী রোহন ও শাহিদ নানা নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় শাহিদ জানিয়েছে, ঘটনার দিন পনেরো আগে রোহন তার কাছে তিন হাজার টাকা ধার নেয়। সে সেই টাকা বাড়ি থেকে চুরি করে বন্ধুকে দেয়। বাড়িতে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় সে বন্ধুকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু টাকা ফেরত না দেওয়ায় রোহনের উপরে তার আক্রোশ তৈরি হয়। খুনের দিন পাঁচেক আগে নিজের ল্যাপটপটি শাহিদকে দিয়ে দেয় রোহন। তবু তার রাগ কমেনি। এর পরেই রোহনকে খুনের পরিকল্পনা করে সে।

পুলিশের দাবি, জেরায় শাহিদ জানিয়েছে, ঘটনার আগের দিন সে বুলবুলিতলা বাজার থেকে ইঁদুর মারার বিষ ও একটি দড়ি কেনে। রাতে আমবাগানে দড়িটি সে লুকিয়ে রেখে যায়। পর দিন বিকেলে তারা এলাকায় মনসা পুজোর মেলায় যায়। সেখান থেকে বুলবুলিতলা বাজারে গিয়ে মদ, মাংস ও দই কেনে। সে সবের টাকা দেয় রোহনই। বাড়ি ফিরে তারা দু’জন মদ্যপান করে। তার পরে শাহিদ রোহনকে নিয়ে যায় পাশের আমবাগানে। সেখানে একটি ঠান্ডা পানীয়ের বোতলে ইঁদুর মারার বিষ মিশিয়ে বন্ধুকে দেয়। তা খাওয়ার পরেই অচেতন হয়ে পড়েন রোহন। তখন শাহিদ জঙ্গল থেকে দড়ি এনে তাঁর গলায় পেঁচিয়ে গাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার ধৃতকে কালনা আদালতে তোলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Money Friends
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE