Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

চোরাপথে বিরল তক্ষক কেনাবেচা, গ্রেফতার দুই জেলার দু’জন

বন দফতরের কর্তাদের দাবি গেকো প্রজাতির পূর্ণবয়স্ক একটি তক্ষক প্রায় ৫০ লক্ষ টাকায় কেনাবেচা হয়। গোয়ালপাড়া থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাণিটির বয়স মাস ছয়েক। এই ধরনের প্রাণীও বিক্রি হয় পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকায়।

উদ্ধার হয়েছে এই তক্ষকটি। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হয়েছে এই তক্ষকটি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০৭
Share: Save:

ভাড়া বাড়িতে ঢাকনা বন্ধ রাখা হয়েছিল বিরল প্রজাতির তক্ষকটি। বিক্রির জন্য খরিদ্দার খোঁজা হচ্ছিল। তার আগেই পূর্বস্থলীর গোয়ালপাড় থেকে সেটি উদ্ধার করল পুলিশ ও বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জ। রবিবার তক্ষক বেচাকেনার অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয়েছে রণজিৎ চৌধুরী এবং মারফৎ শেখ নামে দু’জনকে। পুলিশ জানায়, নদিয়ার বেথুয়াডহরির বাসিন্দা রণজিৎ ও পূর্বস্থলী ১ ব্লকের ডাহাপাড়ার বাসিন্দা মারফতের কাছ থেকে দুটি মোবাইল মিলেছে। অসম থেকে মোটা টাকায় চোরাপথে প্রাণিটিকে আনা হয়েছে বলেও দাবি পুলিশের।

বন দফতরের কর্তাদের দাবি গেকো প্রজাতির পূর্ণবয়স্ক একটি তক্ষক প্রায় ৫০ লক্ষ টাকায় কেনাবেচা হয়। গোয়ালপাড়া থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাণিটির বয়স মাস ছয়েক। এই ধরনের প্রাণীও বিক্রি হয় পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকায়। বন দফতরের কর্তারা জানান, অসম, ডুয়ার্স -সহ কয়েকটি জায়গায় এদের দেখা যায়। চোরা শিকারিরা নির্দিষ্ট অঞ্চলে দীর্ঘসময় ধরে ফাঁদ পেতে এদের সন্ধান পায়। নেপাল, বাংলাদেশ হয়ে চিনেও পৌঁছে যায় গেকো। বিরল এই প্রাণীটির শরীরের নানা অংশের ওষধি গুণ থাকায় এটির দাম এত বেশি বলেও দাবি তাঁদের।

শনিবার বিকেলে প্রথমে এই তক্ষকটির সন্ধান পায় নাদনঘাট থানার পুলিশ। দ্রুত খবর যায় বন দফতরে। এর পরেই পুলিশ এবং বন দফতর যৌথ অভিযান চালিয়ে গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে গেকোটিকে। দীর্ঘ সময় ধরে বনকর্তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হন এটি বিরল প্রজাতির প্রাণী। এর পরেই বন দফতরের কাটোয়ার রেঞ্জ অফিসার সুকান্ত ওঝা ‘ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন’ আইন ১৯৭২ অমান্য করার অভিযোগে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।

এ দিন কালনা আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়। আদালতে সুকান্তবাবু ছাড়াও হাজির ছিলেন বর্ধমান ডিভিশনের বিট অফিসার শুভাশিস সিংহ। ওই প্রাণীটিকে বর্ধমানের রমনারবাগান মিনি জ়ু-তে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।

বনকর্তাদের দাবি, তাঁরা তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন এজেন্ট মারফত তক্ষক কেনাবেচা চলত। প্রাণীটি রাখা ছিল পেশায় তাঁতশ্রমিক, রণজিতের ভাড়াবাড়িতে। বিভিন্ন প্রাণীর ডিম এবং মধু খেতে দেওয়া হতো তক্ষকটিকে। এক কর্তার কথায়, ‘‘আরও লোক রয়েছে এই চক্রে। মোটা বিনিয়োগও রয়েছে।’’

তবে এ দিন আদালতে যাওয়ার পথে ধৃত রণজিত দাবি করেন, তাঁর বাড়িতে কিছু দিন আগে একজন প্রাণীটি রেখে যায়। পরে আর নিতে আসেননি। ধৃতদের আইনজীবী অরিন্দম বাজপায়ীর দাবি, ‘‘মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে দু’জনকে। আসল অপরাধীরা পলাতক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Geko Geko Smugling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE