Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
‘খুন’ পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। জাতীয় সড়কে অবরোধ, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ

বাড়ির কাছেই উদ্ধার দেহ, নালিশ খুনের

নিহতের দাদু রাজেন্দ্র পাসোয়ান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বর্ষা মোবাইলের ‘সিম কার্ড’ ও বাড়ির জিনিসপত্র কিনতে স্থানীয় দোকানে যায়। তার পরে ঘণ্টা দুয়েক কেটে গেলেও বর্ষা বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয় এলাকায়।

মেয়ে নেই, শুনে নিহত কিশোরীর মা। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

মেয়ে নেই, শুনে নিহত কিশোরীর মা। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৭
Share: Save:

পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া বর্ষা পাসোয়ান (১১) নামে এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার হল বাড়ির অদূরেই। বৃহস্পতিবার রাতে জামুড়িয়ার বোগরাচটি গ্রাম লাগোয়া নিচুধাওড়া এলাকার ঘটনা। এই ঘটনার পরে দফায় দফায় পথ অবরোধ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর-সহ নানা ঘটনা ঘটে এলাকায়।

নিহতের দাদু রাজেন্দ্র পাসোয়ান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বর্ষা মোবাইলের ‘সিম কার্ড’ ও বাড়ির জিনিসপত্র কিনতে স্থানীয় দোকানে যায়। তার পরে ঘণ্টা দুয়েক কেটে গেলেও বর্ষা বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয় এলাকায়। রাজেন্দ্রবাবু জানান, সাড়ে ৯টা নাগাদ বাড়ির থেকে প্রায় কুড়ি ফুট দূরে ফাঁকা জায়গায় একটি জলা জায়গার পাশে বর্ষার পায়ের একটি চটি পাওয়া যায়। রাজেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘আরও একটু খোঁজ করতেই দেখি, নাতনির আরও একটি চটি পড়ে। খানিক এগোতেই দেখি, ঘাসে ঢাকা নাতনির দেহ।’’

ঘটনার কথা চাউর হতেই এলাকাবাসী বাড়ির সামনেই অপরাধীদের খুঁজে বার করার দাবিতে বোগরাচটি মোড় লাগোয়া ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে যায় জামুড়িয়ার থানার শ্রীপুর ফাঁড়ি পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে বাসিন্দারা ইট, পাথর নিয়ে পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালান। পরে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (‌সেন্ট্রাল) অলোক মিত্রর নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বাসিন্দাদের বুঝিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

শুক্রবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহের ময়না-তদন্ত করে নিয়ে আসার আগে অলোকবাবুর নেতৃত্বে ফের বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। ঘটনাস্থল পরীক্ষা করানো হয় পুলিশ-কুকুর দিয়ে। পুলিশ কুকুরটি ঘটনাস্থল থেকে প্রথমে দু’শো মিটার দূরে ইসিএলের পরিত্যক্ত ভূগর্ভস্থ খনির দিকে যায়। পরে ফের সেখান থেকে ঘটনাস্থলে আসে।

এ দিন নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন জামুড়িয়ার সিপিএম বিধায়ক জাহানারা খান, আসানসোল পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর তাপস কবি, মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায় প্রমুখ। জাহানারার ক্ষোভ, ‘‘রাজ্য জুড়ে আইনি পরিস্থিতি শোচনীয়। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে অন্যত্র খুন করে ওই কিশোরীর দেহ বাড়ির কাছে ফেলে রেখে যায় দুষ্কৃতীরা। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানায়, নিহতের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

কিন্তু কেন এই খুন? নিহতের মা রেখাদেবী বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ দিনের পারিবারিক বিবাদ রয়েছে। সেই কারণেই এই ঘটনা। অভিযুক্তদের চরম শাস্তি হোক।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে এডিসিপি (‌সেন্ট্রাল) সায়ক দাস বলেন, ‘‘খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে দু’জনকে আটক করা হয়েছে।’’ এই দু’জনই স্থানীয় বাসিন্দা বলে পুলিশ জানায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Crime murder ECL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE