বন্দুক দেখিয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে মেরে জখম করে সোনা লুঠ করে পালাল এক দল দুষ্কৃতী। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুর শহরের জনবহুল বেনাচিতি ভিড়িঙ্গি মোড়ের একটি বেসরকারি স্বর্ণঋণ প্রদানকারী সংস্থায়। পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা জানিয়েছেন, চার জনের একটি দল ডাকাতির ঘটনায় জড়িত। ওই অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ-সহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। ঠিক কী পরিমাণ সোনা লুঠ হয়েছে, তা-ও জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ প্রথমে এক দুষ্কৃতী সোনা বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া সংস্থাটির কার্যালয়ে এসে ঢোকে। তার মাথায় মাথায় ছিল হেলমেট, চোখে সানগ্লাস। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও দু’জন ঢোকে। সেই সময় ভিতরে ছিলেন মলয় বিশ্বাস নামে এক গ্রাহক। তিনি জানান, দুই দুষ্কৃতী ছোট আগ্নেয়াস্ত্র বের করতেই কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী বন্দুক তাক করেন। সঙ্গে সঙ্গে রক্ষীকে মেরে রক্তাক্ত করে তাঁকে এবং বাকিদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এর পর সবাইকে বাথরুমে ঢুকিয়ে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয় দুষ্কৃতীরা। বিনা বাধায় ভল্ট খুলে দু’টি ব্যাগে সোনা লুঠ করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। মলয়বাবু বলেন, ‘‘বাথরুমের দরজা ভেঙে বেরিয়ে দেখি, আমাদের মোবাইলগুলো অন্তত রেখে দিয়ে গিয়েছে। বাবাকে ফোন করে ডাকি।’’ এর পরেই আশপাশ থেকে আরও অনেকে ছুটে আসেন। দুষ্কৃতীরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছিল বলে মলয়বাবু জানিয়েছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ কমিশনার, ডিসি অভিষেক মোদি, এসিপি বিমলকুমার মণ্ডল ওই কার্যালয়ে চলে আসেন। প্রাথমিক তদন্তের শেষে পুলিশ জানায়, মোট চার জন ছিল। কয়েক মাস আগেই কলকাতার ডানলপে দিনের আলোয় একটি স্বর্ণঋণ সংস্থা থেকে ৩০ কেজি সোনা লুঠ করে করে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গিতেই ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আর এক স্বর্ণঋণ সংস্থায় লুঠ হয়েছিল প্রায় ৩৬ কেজি সোনা। সেই ঘটনা এখনও দুর্গাপুরবাসীর মনে টাটকা।
তদন্তে নেমে ৫ ফেব্রুয়ারি ঝাড়খণ্ডের বারোয়াড্ডায় একটি বাড়ির উঠোন খুঁড়ে পুলিশ প্রায় ৪ কেজি সোনা উদ্ধার করে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট ১১ জন ধৃত এখন জেলে। তবে এ দিনের ডাকাতির ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীরা ঝাড়খণ্ড থেকেই এসেছিল কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। পুলিশ কমিশনার জানান, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy