Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পুরসভার জমি দখল করে বিক্রি, অভিযোগ কুলটিতে

পুরসভার জমি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে প্লট হিসেবে। কুলটিতে এই অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে প্রশাসন। কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে। বিরোধী দলগুলির অবশ্য দাবি, দেখভালের অভাবেই বেহাত হয়ে যাচ্ছে জমি।

এই জমি নিয়েই উঠেছে আঙুল।—নিজস্ব চিত্র।

এই জমি নিয়েই উঠেছে আঙুল।—নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
কুলটি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:১৯
Share: Save:

পুরসভার জমি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে প্লট হিসেবে। কুলটিতে এই অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে প্রশাসন। কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে। বিরোধী দলগুলির অবশ্য দাবি, দেখভালের অভাবেই বেহাত হয়ে যাচ্ছে জমি।

কুলটি পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে এমন ঘটনা ঘটেছে। বরাকরের হনুমানচড়াই এলাকায় একটি নার্সিংহোমের পিছনের দিকে পুরসভার কয়েক একর জমি আছে। সেই জমি প্লট করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দিন কয়েক আগে বিষয়টি পুর কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তা জানানো হয় পুরসভার প্রশাসক তথা আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত গুপ্তকে। তিনি জানান, পুরসভার জমির দলিল ঘেঁটে ঘটনার সত্যতা যাচাই করার পরে থানায় অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুমিতবাবু বলেন, ‘‘আমরা নিজেরাও তদন্ত শুরু করেছি।’’ সোমবার সুমিতবাবু কুলটি পুরসভায় এসে বৈঠক করেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি দখল করে বিক্রির পাশাপাশি ওই এলাকায় পুরনো একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগও করা হয়েছে।

কুলটি পুরসভার এই জমি বেহাত হওয়ার পিছনে আবার চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন বিরোধী কাউন্সিলররা। অভিযোগ, শাসকদলের এক প্রভাবশালী কাউন্সিলরের মদতে কিছু জমি মাফিয়া এই কাজে নেমেছে। বিষয়টি অনেক আগে তাদের নজরে এসেছে দাবি করে বিরোধীদের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি। দিন কয়েক আগে এই নিয়ে তৃণমূলের কিছু কাউন্সিলরের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। বিষয়টি এর পরে চেপে রাখা সম্ভব হবে না বুঝেই থানায় অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অনুমান বিরোধীদের।

বিরোধীদের আরও অভিযোগ, শুধু বরাকর নয়, কুলটির সন্ন্যাসীতলা এলাকাতেও পুরসভার আরও কয়েক একর জায়গা জমি মাফিয়ারা দখল করার চক্রান্ত করছে। পুর কর্তৃপক্ষকে তাঁরা সে কথা জানিয়েছেন বলেও দাবি প্রাক্তন বিরোধী কাউন্সিলরদের। পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা প্রিয়ব্রত সরকার বলেন, ‘‘পুরসভার সম্পত্তি সাধারণ মানুষের। তা রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনের। তাঁরা সক্রিয় থাকলে এই কাণ্ড ঘটত না বলেই আমরা মনে করি।’’ বিজেপি-র আসানসোল জেলা সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের মদতেই সরকারি সম্পত্তির লুঠপাট হচ্ছে। আমরা দাবি করেছি, এই ঘটনায় শাসকদলের যে সব কাউন্সিলরের পরোক্ষ মদত আছে তাঁদের খুঁজে বের করে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিক।’’ কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক চণ্ডী চট্টোপাধ্যায় আবার এ নিয়ে লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ করার কথা জানিয়েছেন।

যদিও জমি দখল করে বিক্রির ঘটনায় শাসকদলের কোনও কাউন্সিলরের জড়িয়ে থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কুলটির প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বিরোধীরা স্রেফ তৃণমূলের বদনাম ছড়াতে এমন অভিযোগ তুলছে। তিনি জানান, ঘটনার তদন্তে তাঁরা প্রশাসনকে সব রকম সাহায্য করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE