Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কোন রাস্তা পাকা হবে, তৃণমূলের কোন্দল কাঁকসায়

কোন রাস্তা পাকা করা হবে, গ্রাম সংসদের বৈঠকে সে নিয়ে কোন্দলের জেরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী মারপিটে জড়াল কাঁকসার গোপালপুর গ্রামে। দু’পক্ষের এক জন করে জখম হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। সোমবার রাত ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। গভীর রাতে দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ করে।

হাসপাতালে আহত। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে আহত। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৩
Share: Save:

কোন রাস্তা পাকা করা হবে, গ্রাম সংসদের বৈঠকে সে নিয়ে কোন্দলের জেরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী মারপিটে জড়াল কাঁকসার গোপালপুর গ্রামে। দু’পক্ষের এক জন করে জখম হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। সোমবার রাত ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। গভীর রাতে দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ করে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপালপুর গ্রামে রাস্তা তৈরির জন্য ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এক পক্ষের দাবি ছিল, পুরনো একটি রাস্তা সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে। সেটির সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হোক। অন্য পক্ষের দাবি, একটি মোরাম রাস্তা পাকা করা হবে। তা নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে টানাপড়েন চলছিল কয়েক দিন ধরেই। সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামের পূর্বপাড়ায় বড় কালীতলায় ২ ও ৩ নম্বর গ্রাম সংসদের বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে দু’পক্ষের বিবাদ চরমে ওঠে। মাথা ফেটে যায় এক কিশোরের। মার খেয়ে জখম হন আরও এক জন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার দুই তৃণমূল নেতা কাঞ্চন লায়েক ও রবিপদ লায়েকের অনুগামীদের মধ্যেই রাস্তা তৈরি নিয়ে বিবাদ চলছিল। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, রবিপদ লায়েক, বিকাশ রায়, কাঞ্চন দে-সহ বেশ কয়েক জন এসে হামলা চালায়। তাতে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুবোধ দে-র মদত রয়েছে। কাঞ্চন লায়েককে মারধর থেকে বাঁচাতে গিয়ে মাথা ফাটে তাঁর ছেলে প্রীতমের।

সুবোধবাবু যদিও হামলায় তাঁর মদতের অভিযোগ অস্বীকার করেন। রবিপদবাবুর পাল্টা অভিযোগ, তাঁর উপরেই হামলা চালায় কাঞ্চনের লোকজন। তাঁর দাবি, বৈঠকে গ্রামবাসী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন, তৃণমূলের কর্মী হিসেবে নয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিকে অগ্রাহ্য করে তুলনায় কম প্রয়োজন এমন একটি রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ হয়েছিল। তাঁরা প্রতিবাদ করায় হামলা হয়।

পঞ্চায়েত সদস্য সুব্রতবাবুর আবার দাবি, পঞ্চায়েতের বৈঠকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে তাঁরা কাজ করে থাকেন। যে রাস্তাটি সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছিলেন, সেটিতে সারা বছর জল জমে থাকে। বর্ষায় যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এলাকার বাসিন্দাদের ভুগতে হয়। তাই সেটি সংস্কারের উদ্যোগ হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে দলীয় কর্মী-সদস্যদের হাতেই হেনস্থা হতে হল, তাতে আমরা বীতশ্রদ্ধ। এর বিহিত চাই।’’ প্রীতম এবং রবিপদবাবু— দু’জনেই হাসপাতালে ভর্তি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য তথা কাঁকসা ব্লকের অন্যতম তৃণমূল নেতা দেবদাস বক্সী মঙ্গলবার দু’পক্ষকে বুঝিয়ে মিটমাটে উদ্যোগী হন। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। পঞ্চায়েত সদস্য সুব্রতবাবুর দাবি, ‘‘বিহিত না হলে কয়েক জন পঞ্চায়েত সদস্য পদ থেকে সরে দাঁড়াব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

দেবদাসবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘একটি কাজ নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে অশান্তি হয়েছে। এর মধ্যে দলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’ দলের পঞ্চায়েত সদস্যের পদত্যাগের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘কারও ক্ষোভ থাকতেই পারে। তবে বিষয়টি মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE