Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Durgapur

রেলগেটে ছন্দপতন দুর্গাপুরের

শুধু রেলগেট নয়, এই পথে বিপত্তির ফাঁদ পেতে বসে আছে আরও অনেক কিছুই— জানাচ্ছেন দুর্গাপুরের বাসিন্দারা।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:১০
Share: Save:

বছরের পর বছর ধরে বেহাল পড়েছিল দুর্গাপুরের হ্যানিম্যান সরণি।

২০১৬-য় রাস্তাটির সংস্কার ও সম্প্রসারণ হয়। কিন্তু রাস্তাটি ঝকঝকে ও চওড়া হওয়ার পরেও যানবাহনের গতি বাড়েনি! উল্টে বেড়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। রাস্তাটি নিয়ে শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ এমনই।

কিন্তু এই রাস্তাটি কেন গুরুত্বপূর্ণ? ২ নম্বর জাতীয় সড়কে গাঁধী মোড় থেকে বেরিয়ে গ্যামন ব্রিজ মোড়ে হ্যানিমান সরণি গিয়ে মিশেছে বিসি রায় রোডে। দুর্গাপুরের অন্যতম পুরনো রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুক রয়েছে এই রাস্তার পাশে। শিল্পতালুকে প্রথম কারখানাটি উৎপাদন শুরু করে ১৯৯৭ সালে। তার পরে একে একে গড়ে উঠেছে আরও বহু কারখানা। এই সব কারখানার ট্রাকগুলি যাতায়াত করে হ্যানিম্যান সরণি দিয়েই। অদূরেই রয়েছে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি), দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশন (ডিটিপিএস), ডিটিপিএস কলোনি, স্কুল, ব্যাঙ্ক, বাজার। গাঁধী মোড়ে রয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল। তা ছাড়া মায়াবাজার, ডিটিপিএস কলোনি, পুরষা, রাতুড়িয়া, অঙ্গদপুর, অর্জুনপুর-সহ আশপাশের বাসিন্দারাও যাতায়াতের জন্য এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। অনেকেই এই রাস্তা ধরে সিটি সেন্টারে নানা সরকারি দফতরেও যান। ফলে, সর্বক্ষণ ট্রাক, ডাম্পার, গাড়ি, বাইক, পথচারীদের ভিড় থাকে

এই রাস্তায়।

রাস্তায় যানবাহনের গতি হঠাৎ থমকে যায় মায়াবাজার রেলগেটে। এখন করোনা পরিস্থিতি। ট্রেন ও মালগাড়ির সংখ্যা কমেছে। এলাকাবাসী জানান, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দিন-রাতের অধিকাংশ সময় রেলগেট বন্ধ থাকে। রাজধানী, শতাব্দী, মেল, সুপারফাস্ট, লোকাল ট্রেন তো আছেই, থাকে মালগাড়ির চাপও। স্থানীয় বাসিন্দা বিভাস সূত্রধর, লোকনাথ বসুরা বলেন, ‘‘মায়াবাজার রেলগেট আমাদের কাছে আতঙ্কের। রাস্তায় বেরিয়ে সময়ের সব হিসেব ওলট-পালট হয়ে যায়।’’ এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘক্ষণ রেলগেট বন্ধ থাকায় অনেকে বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বন্ধ রেলগেট গলে পেরোতে যান। এমনকি, অনেক স্কুল পড়ুয়াকেও দেখা যায় একই পদ্ধতিতে রাস্তা পারাপার করতে। ফলে, বাড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে রাতুড়িয়া, অঙ্গদপুর, মায়াবাজার, ডিটিপিএস কলোনি থেকে সিটি সেন্টার, বেনাচিতি বা ডিএসপি টাউনশিপে যাওয়ার সময়ে অনেকেই রেলগেটের ভয়ে তুলনায় আরও ব্যস্ত বিসি রায় রোড ধরে যাতায়াত করতে বাধ্য হন।

এ দিকে, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) জানিয়েছে, ২০০৬-এ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে রেল গেটে উড়ালপুল তৈরির দাবি নিয়ে বৈঠক হয়। রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দেওয়া হয়। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ২০১৬-য় তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে চিঠি দেন একই দাবিতে। কিন্তু এত সবের পরেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। যদিও, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের এক কর্তা জানান, মায়াবাজার রেলগেটে উড়ালপুল নির্মাণের জন্য সমীক্ষা কাজ শুরু হয়েছে। উড়ালপুলের নকশা তৈরির কাজ চলছে।

তবে শুধু রেলগেট নয়, এই পথে বিপত্তির ফাঁদ পেতে বসে আছে আরও অনেক কিছুই— জানাচ্ছেন দুর্গাপুরের বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur rail gate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE