Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিতে চাষে ক্ষতির আশঙ্কা

বৃহস্পতিবার দিনভর ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। কালনা, পূর্বস্থলীর বেশ কয়েক জন চাষি জানান, রবি মরসুমের মুখে যত বেশি বৃষ্টি হবে, তত নানা চাষে বাড়বে ক্ষতির বহর।

এমনই হাল ধান খেতের। কালনায়। নিজস্ব চিত্র

এমনই হাল ধান খেতের। কালনায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৪
Share: Save:

টানা বৃষ্টি হচ্ছে বুধবার থেকে। মেঘলা আকাশ, সঙ্গে বইছে ঠাণ্ডা বাতাস। এই পরিস্থিতিতে জেলার নানা প্রান্তের চাষি ও কৃষি-কর্তাদের একাংশ ফসলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।

বৃহস্পতিবার দিনভর ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। কালনা, পূর্বস্থলীর বেশ কয়েক জন চাষি জানান, রবি মরসুমের মুখে যত বেশি বৃষ্টি হবে, তত নানা চাষে বাড়বে ক্ষতির বহর। জেলায় আমন ধানের চাষই সব থেকে বেশি হয় বলে কৃষি দফতর জানায়। ইতিমধ্যেই স্বল্পমেয়াদি আমন ধান (যেমন, ‘মিনিকিট’, ‘রত্না’, ‘ক্ষিতীশ’ প্রভৃতি) নানা জায়গায় কাটাও শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে সেই সব কাটা ধানের অঙ্কুরোদগম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে বেশির ভাগ জমিতে বর্তমানে রয়েছে লালস্বর্ণ প্রজাতির দীর্ঘমেয়াদি ধান। সেগুলির বয়স, এই মুহূর্তে ১০০ থেকে ১১০ দিন। কৃষিকর্তাদের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়াই ‘ঝলসা’ ও ‘ধসা’ রোগ দেখা দিতে পারে এই সব ধান গাছে। তা ছাড়া, টানা বৃষ্টির পরে আচমকা ভাল ঠান্ডা পড়লে ধানের ফলন মার খেতে পারে বলে আশঙ্কা।

জেলার চাষিরা ধান কেটে আলু, পেঁয়াজের মতো রবি ফসলের দিকে ঝোঁকেন। বৃষ্টির জেরে রবি মরসুমও পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্য বার এই সময়ে পেঁয়াজ চাষিরা বীজতলা তৈরির কাজ সেরে ফেলেন। এ বার দুর্গাপুজোর সময়ে বৃষ্টির জেরে অনেক পেঁয়াজ চাষিরই জমিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। পিছিয়ে যায় পেঁয়াজ চাষ। সম্প্রতি বহু পেঁয়াজ চাষি বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। টানা বৃষ্টিতে তা-ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া-বিজ্ঞান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জেলায়।

পেঁয়াজ চাষি মকিব শেখ বলেন, ‘‘গতবার দুর্যোগের জেরে প্রায় মাসখানেক চাষ পিছিয়ে গিয়েছিল। এ বার যদি তার থেকেও বেশি পিছিয়ে যায় তা হলে ফসল তোলার সময়ে ফের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়তে হতে পারে। গতবার ভাল ফলন হলেও ফসল তোলার সময়ে বৃষ্টিতে পচে যায় বহু পেঁয়াজ।’’ আলু চাষি মৃণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘সময়ে আলু চাষ না হলে শেষ দিকে নাবিধসার মতো রোগ দেখা দেয় গাছে। জানি না, এ বার কী হবে।’’ কৃষি দফতরের আশঙ্কা, বৃষ্টি বাড়লে ক্ষতি হবে আনাজ চাষেও। সে ক্ষেত্রে নিচু এলাকার জমিগুলিতে জল জমে আনাজের গাছ পচে যাবে। সে ক্ষেত্রে বাজারে আনাজের জোগানও কমে যেতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে চাষিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি দফতর। জেলার এক সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘চাষিদের প্রথমেই জমি থেকে জমা জল বাইরে বার করতে হবে। আবহাওয়ার উন্নতি হলে ছত্রাকনাশক হিসেবে আনাজের জমিতে লিটার প্রতি জলে আড়াই গ্রাম ‘ম্যানকোজেব’ স্প্রে করা যেতে পারে। তা ছাড়া ওই একই পরিমাণ জলে ‘মেটালক্সিল’, ‘ম্যানকোজেব’-এর মিশ্রণ দু’গ্রাম আঠার সঙ্গে মিশিয়ে ‘স্প্রে’ করলে চাষিরা উপকৃত হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crop Damage Depression Heavy Rainfall Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE