Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ইসিএলকে বলল কোর্ট

মৃত খনিকর্মীর মেয়েকেও দিতে হবে ক্ষতিপূরণ

খনিকর্মী বাবার মৃত্যুর ১৮ বছর পর তাঁর মেয়েকে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ইসিএলকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৭ সালে পাণ্ডবেশ্বর এরিয়ার খোট্টাডিহির খোলামুখ খনির কর্মী জয়প্রকাশ রাজভর মারা যান। এক বছর আগেই জয়প্রকাশবাবুর স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন। ওই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০১
Share: Save:

খনিকর্মী বাবার মৃত্যুর ১৮ বছর পর তাঁর মেয়েকে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ইসিএলকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৭ সালে পাণ্ডবেশ্বর এরিয়ার খোট্টাডিহির খোলামুখ খনির কর্মী জয়প্রকাশ রাজভর মারা যান। এক বছর আগেই জয়প্রকাশবাবুর স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন। ওই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে বর্তমান। বাবার মৃত্যুর পর জয়প্রকাশবাবুর মেয়ে দেওয়ান্তি কুমারী রাজভর ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে চাকরির আবেদন করেন। দেওয়ান্তিদেবী জানান, বাবার মৃত্যুর সময় তাঁর ভাইয়ের বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। আবেদন জানানোর পর বার বার ইসিএল দফতরে যান তিনি। কিন্তু শুধু আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মেলেনি। এর পর ২০১০ ও ২০১৩ সালে তাঁর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা নেয় ইসিএল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি ইসিএল জানিয়ে দেয়, বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়।

এই নির্দেশ পাওয়ার ৩ দিন পর ইসিএলে পাল্টা চিঠি দেন দেওয়ান্তিদেবী। সেখানে ইসিএলের বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ করেন। শারীরিক পরীক্ষার পরেও চাকরি না দেওয়ার জন্য সুদ-সহ মাসিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি। দেওয়ান্তিদেবীর অভিযোগ, ‘‘কর্মরত জীবনে ইসিএলের কোনও কর্মী মারা গেলে তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াই নিয়ম। কিন্তু আমার ক্ষতিপূরণের দাবিকে কোনও গুরুত্বই দেয়নি ইসিএল। বাধ্য হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করি। তার পর আদালত সুদ-সহ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় দিয়েছে।’’

দেওয়ান্তিদেবীর আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, গত ৩ মার্চ বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইসিএল কর্তৃপক্ষ ও মামলাকারীকে হলফনামা পেশ করে তাঁদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেন। ইসিএল আদালতে জানায়, মৃত কর্মীর স্ত্রী বেঁচে থাকলে তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হত। কিন্তু মেয়েকে চাকরি অথবা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম ইসিএলে নেই। এর পর ৬ এপ্রিল আদালত তার রায়ে জানিয়ে দেয়, এ ক্ষেত্রে ইসিএলের যুক্তির কোনও ভিত্তি নেই। অবিলম্বে মৃত কর্মীর মেয়ের জন্য ইসিএলকে মাসিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বকেয়া অর্থ সুদ-সহ তিন মাসের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে। মেয়ে অবিবাহিত থাকলে ৬০ বছর বয়স অবধি মাসিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তবে বিয়ে করলে তিনি আর ক্ষতিপূরণ পাবেন না। ইসিএলের সিএমডির কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘হাইকোর্টের রায় মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE