একজোট: আসানসোলে সম্প্রীতি মিছিল। নিজস্ব চিত্র
এত দিন পুলিশের নজরদারি ছিল। রবিবার উঠেছে ১৪৪ ধারা। কিন্তু ঝুঁকি নিতে চাইছেন না আসানসোল রেলপাড়ের শৈলেশ প্রসাদ বা মহম্মদ মৌলানারা। আর যাতে গোলমাল না পাকে, সে জন্য রাতপাহারার ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। একই পন্থা নিয়েছেন রানিগঞ্জের রামবাগানের বিজয় সিংহ, ওয়াসিম সিদ্দিকিরাও। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘সবাইকে এককাট্টা থাকতে হবে।’’
সপ্তাহখানেক পরে রানিগঞ্জ হাটতলায় সোমবার দোকানপাট খুলেছে। লুঠপাট হওয়া একটি মাছের আড়তে এ দিন সকালে কাজে আসেন বারো জন কর্মী। আক্রম আনসারি, পূরণ দাস, শিশির ধীবরেরা বলেন, ‘‘এখানে সব পক্ষের লোকজনের পাশাপাশি দোকান রয়েছে। আমরা দিনে দু’শো টাকা করে মজুরি পাই। গোলমালে ক্ষতি হল আমাদের মতো লোকজনের!’’ আড়তের মালিক চন্দন ধীবর বলেন, ‘‘সবাই মিলে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে। সবাই এ বার নির্ভয়ে দোকান খুলুক।’’
অশান্তির পরেই রানিগঞ্জের রামবাগানের ব্যবসায়ীরা থানায় গিয়ে রাতপাহারা দেওয়ার অনুমতি নেন। জ্যোতি সিংহ, বিজয় সিংহ, ওয়াসিম সিদ্দিকিরা জানান, দোকান বাঁচাতে পালা করে ২০ জন প্রতি রাতে পাহারা দিচ্ছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘এলাকার মানুষ সজাগ রয়েছেন। কেউ গোলমাল পাকাতে এলে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেব।’’
আসানসোলের রেলপাড়ে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে রবিবার থেকে পাহারা শুরু হয়েছে তৃণমূল কাউন্সিলর দিলীপ মালির উদ্যোগে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানে সবাই মিলেমিশে থাকেন। আগে কখনও এমন ঘটেনি। গোলমালে স্থানীয় কেউ ছিলেন না। শান্তি বজায় রাখতে পাহারা চলবে।’’
শহরের চাঁদমারি শিবমন্দির লাগোয়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলি সোমবার দেখতে যান রেলপাড়ের হাজি মহম্মদ ইবরার। ১২টি দোকানের পুনর্নির্মাণে অর্থসাহায্যও করেন। এ দিন বিকেলে আসানসোলের আশ্রম মোড় থেকে গির্জা মোড় পর্যন্ত শান্তিরক্ষার ডাক দিয়ে মিছিল করেন সব পক্ষের মানুষ। রানিগঞ্জ-আসানসোলের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে জো়ট বাঁধা শুরু হয়েছে অন্যত্রও। কুলটির চিনাকুড়িতে মন্দির ও মসজিদ পাহারার ব্যবস্থা করেন স্থানীয়রা। রাজকুমার ঠাকুর, মহম্মদ শামিম খানদের পণ, ‘‘এলাকার শান্তি বিঘ্নিত হতে দেওয়া চলবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy