জমি থেকে তোলা হচ্ছে আলু। রবিবার কালনায়। —নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি থামার পরে জমিতে আলুর পরিস্থিতি দেখে তাঁরা চিন্তিত, দাবি গ্রামীণ সমবায়গুলির অনেকের। তাঁরা জানান, আলু চাষের জন্য প্রচুর ঋণ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে চাষিদের বীজ, সার-সহ চাষের উপকরণও দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে ঋণ ও অন্য সহায়তার অর্থ কী ভাবে উঠে আসবে, সে নিয়ে ভাবনায় সমবায়গুলি।
গ্রামীণ সমবায়গুলি প্রতি বারই এলাকার চাষিদের আলু চাষ করার জন্য ঋণ দেয়। চাষিরা আলু বিক্রি করে তা শোধ করেন। এ বার আলু জমি থেকে তোলার শুরুতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়তে হয়। কালনা ১ ব্লকে এক দিনেই প্রায় ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। তাতে জমিতে প্রচুর জল জমে যায়। চাষিদের দাবি, রোদ উঠতেই জল জমে থাকা জমিগুলিতে আলু পচতে শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে সমবায়গুলি তাদের ঋণ কী ভাবে আদায় হবে সে নিয়ে চিন্তিত। সমবায়ের কর্তাদের দাবি, চাষিদের ঋণ দেওয়ার জন্য তাদের অর্থ সাহায্য করে জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক। এমনকি, নিজেদের তহবিল থেকে সার, বীজ, ট্রাক্টরের মাধ্যমে নানা সহায়তা করা হয় চাষিদের। যা পরিস্থিতি তাতে ঋণ শোধ করার অবস্থা নেই বহু চাষির, মনে করছে নানা সমবায়। তাঁদের আশঙ্কা, অর্থ আদায় না হলে রুগ্ণ হয়ে পড়বে সমবায়। তার প্রভাব পড়বে পরবর্তী চাষে।
ইতিমধ্যে কৃষি, সমবায়-সহ নানা দফতরে চিঠি পাঠিয়ে কালনার বেগপুর সমবায় সমিতি জানিয়েছে, এই বৃষ্টিতে আলুচাষে ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি মৌজায় বেশ কিছু জমিতে আলু তুলে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৯০ শতাংশে পচন ধরেছে। সমবায়ের দাবি, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে তারা কিসান কার্ড থাকা ৩৭৬ জন চাষিকে প্রায় এক কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছে। এখন চাষিদের ওই ঋণ শোধ করার মতো পরিস্থিতি নেই। তাই দ্রুত শস্যবিমার অর্থ পাওয়া জরুরি। প্রশাসনকে বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে দেখার আর্জি জানানো হয়েছে। এই সমবায়ের সভাপতি প্রভাস হাউলি বলেন, ‘‘কী ভাবে ঋণের টাকা চাষিরা শোধ করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’
ঘনশ্যামপুর সমবায় সমিতির দাবি, তারা আলুচাষের জন্য ঋণ দিয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। এ ছাড়াও বীজ, সার-সহ নানা রকম সহায়তা করতে খরচ হয়েছে আরও প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। সুলতানপুর পঞ্চায়েতের কাশিমপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি ঋণ দিয়েছে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। সিমুলগড়িয়া সমবায়ের আলুচাষের জন্য দেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা। প্রত্যেকটি সমবায়ের তরফেই জানানো হয়, কী ভাবে টাকা ফেরত আসবে, সে নিয়ে তারা ভাবনায় পড়েছে।
কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ইনসান মল্লিক বলেন, ‘‘সমবায়গুলির দুশ্চিন্তা অমূলক নয়। প্রশাসনের তরফে যাতে চাষিরা দ্রুত ফসলবিমার অর্থ পান, সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy