Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

‘বন্ধ’ দোকান থেকে দেদার বিক্রি প্রদীপ

দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের হাটতলা রোডে পরপর কয়েকটি দশকর্মা ভাণ্ডার রয়েছে। তেমনই একটি দোকানে ঢুঁ দিয়ে দেখা গেল, ভিতরে রং করছেন দোকানদার নিজেই।

রবিবার সকালে রাধানগরে প্রদীপ কেনা। নিজস্ব চিত্র

রবিবার সকালে রাধানগরে প্রদীপ কেনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর ও আসানসোল শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৫৮
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার প্রদীপ, মোমবাতি, মোবাইলের ‘ফ্ল্যাশলাইট’ জ্বালানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার পরে রবিবার সকাল থেকে দুর্গাপুরে প্রদীপ, মোমবাতি কেনার হিড়িক দেখা গেল। তবে ক্রেতারা জানান, ‘লকডাউন’ হওয়ায় প্রকাশ্যে ‘বন্ধ’ই ছিল দশকর্মা ভাণ্ডারগুলি। ফলে, পিছন দরজা দিয়ে বিক্রিবাটা হয়েছে। তবে মুদির দোকান খোলা থাকায় প্রকাশ্যেই এ সব বিক্রি হয়েছে। তবে শনিবার বিকেলেও প্রদীপ, মোমবাতির তেমন চাহিদা ছিল না বলে জানান বিক্রেতারা।

দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের হাটতলা রোডে পরপর কয়েকটি দশকর্মা ভাণ্ডার রয়েছে। তেমনই একটি দোকানে ঢুঁ দিয়ে দেখা গেল, ভিতরে রং করছেন দোকানদার নিজেই। দোকানের পিছনের দরজা দিয়ে ক্রেতারা ঢুকছেন। রং করার ফাঁকেই দোকানদার ক্রেতাদের প্রদীপ, মোমবাতি বিক্রি করছেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দোকান মালিক বলেন, ‘‘লকডাউন। তাই দোকান খোলার অনুমতি নেই। অথচ কেউ শবদাহের সামগ্রী কেনার জন্য ফোন করছেন। পিছনের দরজা দিয়ে সামগ্রী দিতে হচ্ছে। আজকে প্রদীপ ও মোমবাতি নিতেও সকাল থেকে অনেকে আসছেন।’’ তিনি জানান, শনিবার বিকেলে দু’-একজন এসেছিলেন। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় দু’শো ক্রেতা এসেছেন বলে জানান তিনি। এক একজন পনেরো থেকে কুড়িটি প্রদীপ কিনেছেন। মোমবাতি কেউ চার-পাঁচটা কিনেছেন, কেউ বা এক প্যাকেট।

পাশাপাশি, একটি দশকর্মা ভাণ্ডার সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’-তিন রকম ছোট-বড় আকারের মাটির প্রদীপ, নানা মাপের মোমবাতি, সলতে এবং প্রদীপ জ্বালানোর জন্য তিলের তেল বিক্রি হয়েছে। ওই এলাকারই একটি দশকর্মা ভাণ্ডারে গিয়ে দেখা গিয়েছে, দোকানের সামনের দরজা খোলা। তবে দোকান মালিক দাবি করেন, বিক্রিবাটার জন্য নয়, ব্যক্তিগত দরকারেই তিনি দোকানে এসেছেন।

তবে ‘লকডাউন’-এ মুদির দোকান খোলার অনুমতি রয়েছে। ডিসিএল মোড়ের মুদির দোকানের মালিক ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘সকাল থেকে জনা কুড়ি ক্রেতা এসেছেন মোমবাতি কিনতে।’’ সগড়ভাঙার বিডিও মোড়ের মুদির দোকানের মালিক বিপদতারণ দাস বলেন, ‘‘পাঁচ টাকা দামের বাতি একটি করে নিয়ে গিয়েছেন বেশ কিছু ক্রেতা।’’ সকাল থেকে প্রায় ৪০ প্যাকেট মোমবাতি বিক্রি করেছেন বেনাচিতির মুদির দোকানের কর্মী জয়ন্ত বসু। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যা পরিস্থিতি তাতে মনে হচ্ছে দীপাবলি!’’

মোমবাতি নিয়ে দোকান থেকে বেরোনোর পথে মানসী হালদার বলেন, ‘‘মোমবাতি জ্বেলে করোনা মুক্তি হবে না সেটা জানি। কিন্তু বিপদের সময় একে অপরের পাশে আছি, এই বার্তা দিতেই মোমবাতি জ্বালাব বলে ঠিক করেছি।’’

তবে, এ দিন আসানসোলের নানা এলাকা ঘুরে জানা গিয়েছে, প্রদীপ ও মোমবাতির তেমন বিক্রি দেখা যায়নি। যদিও, পাঁচগাছিয়া, ঝনকপুড়া-সহ এলাকার অধিকাংশ কুমোরপাড়ায় কাঁচা প্রদীপ শুকোতে দেওয়া হয়েছে। তবে মৃৎশিল্পীদের বক্তব্য, ‘‘কয়লা মিলছে না। ফলে, মাটি পোড়ানো যাচ্ছে না। যদি কেউ কাঁচা প্রদীপ চান, সেই ভেবে এগুলি বানানো হয়েছে।’’ পাশাপাশি, এ দিন দমকল দফতরের কর্মীরা আসানসোলের নানা এলাকায় মাইকে সতর্কতা প্রচার করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE