জট: ডুবুরডিহিতে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ।ছবি: পাপন চৌধুরী
মাঝেরহাটের সেতুভঙ্গের জের। তার জেরে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া কুলটির ডুবুরডিহি চেকপোস্টে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে কড়াকড়ি শুরু করেছে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে ট্রাক চালকেরা মঙ্গলবার দুপুরে চেকপোস্টে কলকাতা ও ঝাড়খণ্ডগামী দু’দিকের লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন। এর জেরে ট্র্যাফিক পুলিশের মতে, অন্তত প্রায় হাজার দুয়েক গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়।
মাঝেরহাটে সেতু ভাঙার পরে কলকাতায় পণ্যবাহী ভারী ট্রাক চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি, পরিবহণ দফতর সম্প্রতি কুড়ি বা তার বেশি চাকার ট্রেলার গোটা রাজ্যেই চালানো যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর পরেই চেকপোস্টেও শুরু হয় কড়াকড়ি। ফলে সীমানাবর্তী এলাকায় আটকে পড়েছে কয়েকশো পণ্যবাহী ট্রাক। শুধু তাই নয়, কলকাতার বদলে রাজ্যের অন্য জেলায় যাবে, এমন ট্রাককেও আটকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
ট্রাক চালকেরা জানান, এই পরিস্থিতিতে সমস্যা নানা। প্রথমত, বোঝাই পণ্যের কী হবে, তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। অরবিন্দ যাদব নামে হরিয়ানার এক ট্রাক চালক বলেন, ‘‘আমি আপেলবোঝাই ট্রাক নিয়ে বর্ধমান যাচ্ছি। কিন্তু যেতে দিচ্ছে না। আপেল সব পচে যাচ্ছে।’’ বর্ধমানে যাওয়ার কথা ঝাড়খণ্ডের গোবিন্দপুরের বাসিন্দা মহম্মদ সইদুলেরও। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘অন্তত সাত দিন আটকে রয়েছি। ময়দা সব জলে ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’’ লাগোয়া বাঁকুড়া, বীরভূম, মালদহ, ফরাক্কা-সহ রাজ্যের অন্য প্রান্তে যেতে হবে, এমন ট্রাকগুলিকেও আটকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দ্বিতীয়ত, ট্রাক চালকেরা জানান, এ ভাবে আটকে থাকায় খাবার, জল, ওষুধও অমিল।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে কয়েকশো ট্রাকচালক পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডগামী দু’টি লেনই অবরোধ করে দেন। এর জেরে যাত্রিবাহী বাস, অ্যাম্বুল্যান্সও আটকে পড়ে। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ঘণ্টা তিনেক এই অচলাবস্থা চলায় দু’টি লেনে অন্তত দু’হাজার গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়েছে। সেতুগুলির স্বাস্থ্যরক্ষায় বর্তমানে জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দামোদর নদের উপরে বরাকর সেতুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্তত শ’দুয়েক ভারী ট্রাক।
পরিস্থিতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস। পুলিশ ট্রাক চালকদের অবরোধ তুলতে অনুরোধ জানায়। কিন্তু তাঁরা জানিয়ে দেন, সীমানা পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকতে দিতেই হবে।
এর পরেই পুলিশের তরফে কলকাতা ছাড়া অন্য জেলাগুলিতে ঢুকতে দেওয়ার আশ্বাস দেয় পুলিশ। তার পরেই অবরোধ তোলা হয়। অনমিত্রবাবু বলেন, ‘‘কলকাতা ছাড়া লাগোয়া জেলাগুলিতে যাঁরা যাবেন, সেই সব ট্রাক চালকদের কাছ থেকে তালিকা চেয়েছি। তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।’’ দুপুর ২টো নাগাদ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy