Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অসুস্থ ছিলাম, দাবি অভিযুক্ত চিকিৎসকের

রবিবার মেমারির আমাদপুর গ্রামের মৃত কিশোর দাসের পরিজনেরা অভিযোগ করেছিলেন, রাত ১০টা নাগাদ ক্রমাগত হেঁচকি উঠছে দেখে এক নার্সের পরামর্শে জরুরি বিভাগের এক ডাক্তারের কাছে যান তাঁরা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৮
Share: Save:

অভিযোগ ছিল, বারবার ডাকা, হাতে-পায়ে ধরার পরেও আসেননি জরুরি বিভাগের চিকিৎসক। তিনি ব্যস্ত ছিলেন ‘টিভি’ দেখায়। রবিবার ভোরে কালনা মহকুমা হাসপাতালে মারা যান ওই রোগী। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে শুরু হয় ক্ষোভ-বিক্ষোভ। সোমবার ওই ঘটনার তদন্তে হাসপাতালে যান জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ৩ জয়ব্রত দেব। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টা পাঁচেক হাসপাতালে ছিলেন তিনি। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানা যায়নি সন্ধ্যা পর্যন্ত।

রবিবার মেমারির আমাদপুর গ্রামের মৃত কিশোর দাসের পরিজনেরা অভিযোগ করেছিলেন, রাত ১০টা নাগাদ ক্রমাগত হেঁচকি উঠছে দেখে এক নার্সের পরামর্শে জরুরি বিভাগের এক ডাক্তারের কাছে যান তাঁরা। বার বার অনুরোধ করা হলেও দীপেন্দু মহাজন নামে ওই ডাক্তার রোগীকে দেখতে আসেননি। তবে ওষুধ ও ইঞ্জেকশন লিখে দেন। রাত ২টো নাগাদ কিশোরবাবুর অবস্থা খারাপ দেখে হাতে-পায়ে ধরেন তাঁরা। অভিযোগ, উনি আসেননি। পাশেই টিকিট কাউন্টারে বসে টিভি দেখতে ব্যস্ত ছিলেন। ভোরে এক চিকিৎসক দেখতে এলেও বাঁচেননি তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন জয়ব্রতবাবু হাসপাতালে আসার পরেই সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাইয়ের কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয় ওই রাতে কর্তব্যরত চার চিকিৎসক, কয়েকজন নার্স, নিরাপত্তা কর্মী-সহ কয়েকজনকে। ঘটনার বিবরণ জেনে লিখিত বয়ান নেওয়া হয়। তদন্ত চলাকালীন দুপুর দেড়টা নাগাদ মৃত যুবকের শ্বশুর কৃষ্ণ মণ্ডল তাঁর পরিচিত দিলীপ ভৌমিক নামে এক জনকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। দু’পাতার অভিযোগে তাঁরা জানান, জ্বর এবং বমি নিয়ে জামাইকে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার রাত থেকে হেঁচকি ওঠা শুরু হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসককে দেখার কথা বললেও তিনি কম্পিউটারে ব্যস্ত ছিলেন। বার বার বলায় চিকিৎসক দুর্ব্যবহার করেন বলেও তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসার গাফিলতিতে আমার ২৬ বছরের মেয়ের সংসারটা ভেসে গেল। ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারটি দেখুক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’’ অভিযোগ জমা দেওয়ার পরে কৃষ্ণবাবুর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন জয়ব্রতবাবু।

বিকেল ৩টে নাগাদ অভিযুক্ত চিকিৎসককে একটি সাদা কাগজ হাতে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যা জানানোর তদন্তকারী আধিকারিককে জানিয়েছি।’’ পরে তিনি স্বীকার করে নেন, যে ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিল সেখান থেকে ‘কল’ আসা সত্ত্বেও তিনি যাননি। কারণ হিসেবে নিজের অসুস্থতার কথা জানান তিনি। জয়ব্রতবাবু বলেন, ‘‘তদন্ত করার পরে লিখিত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna Sub Divisional Hospital Kalna Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE