Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পাথর খাদানের দূষণে নাজেহাল

সম্প্রতি সালানপুরের উত্তরামপুর-জিতপুর এলাকায় বেআইনি পাথর খাদানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখান কিছু বাসিন্দা।

সালানপুরের এই সব খাদান নিয়েই নালিশ বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

সালানপুরের এই সব খাদান নিয়েই নালিশ বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত বণিক
সালানপুর শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫৭
Share: Save:

জঙ্গলে ঘেরা এলাকায় রমরমিয়ে চলছে পাথর খাদান। পাথর বোঝাই করে ভারী গাড়ি চলাচলের ফলে ভেঙেচুরে যাচ্ছে এলাকার রাস্তা। তৈরি হচ্ছে দূষণও। বারাবনি ও সালানপুরের নানা এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ এই অভিযোগ জানাচ্ছেন বেশ কিছু দিন ধরে। সম্প্রতি সালানপুরের উত্তরামপুর-জিতপুর এলাকায় বেআইনি পাথর খাদানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখান কিছু বাসিন্দা। তার পরেই প্রশাসন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি না নিয়ে চলা পাথর খাদানগুলির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি।

পাথর খাদান খোলার আগে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছ থেকে ‘নো-অবজেকশন’ শংসাপত্র নিতে হয়। তার উপরে ভিত্তি করে জেলা প্রশাসন খাদান চালানোর অনুমতি দেয়। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নিয়ম মেনে আসানসোল মহকুমায় মাত্র তিনটি পাথর খাদান চলছে। দু’টি বারাবনি ব্লকের আমডিহায় ও একটি সালানপুর ব্লকের মহেশপুর এলাকায়। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রের খবর, আসানসোল মহকুমা জুড়ে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা গিয়েছে, নানা এলাকায় প্রায় ৪৯টি পাথর খাদান চলছে প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়া। সেগুলির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, অবৈধ পাথর খাদানগুলির জন্য পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আবার সরকারের রাজস্বও ফাঁকি পড়ছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘বেআইনি পাথর খাদান বন্ধ করা হবে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে দেখার পরামর্শ দিয়েছি।’’

সালানপুরের উত্তরামপুর-জিতপুর পঞ্চায়েতের জিতপুর অঞ্চলে জঙ্গলের মধ্যে রমরমিয়ে অবৈধ পাথর খাদান চলছে বলে খবর মিলেছে, জানান ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তারা। মাসখানেক আগে ওই খাদানে এক শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। জিতপুর মোড়ের বটতলা থেকে সোজা যে রাস্তাটি অজয় নদের দিকে চলে গিয়েছে, তার দু’পাশে জঙ্গলে ঘেরা খাসজমিতে রমরমিয়ে অবৈধ পাথর খাদান চলছে বলে এলাকার কিছু মানুষজন প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছেন। উত্তরামপুর-জিতপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এই অবৈধ পাথর খাদানগুলি বন্ধ হওয়া উচিত। আমি ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’

এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, দিন-রাত পাথর বোঝাই গাড়ির দাপট ও পাথর ভাঙা যন্ত্রের দূষণে তাঁরা জেরবার হয়ে উঠেছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি-সংস্কার) খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি খাদান থেকে পাথর বোঝাই করে যাওয়ার সময়ে গাড়ি ধরা পড়লে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Stone Mine Pollurtion Illegal Mining
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE