Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তদন্তে ‘বাধা’, ইটের ঘায়ে জখম পুলিশ

বারবার গরিব মানুষদের ‘হেনস্থা’ করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ স্থানীয় মানুষদের।

রাউন্দি গ্রামে চলছে পুলিশের টহল। —নিজস্ব চিত্র

রাউন্দি গ্রামে চলছে পুলিশের টহল। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদদাতা
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

মন্দিরে চুরির ঘটনার তদন্তে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ হল পুলিশ। অভিযোগ, কেতুগ্রামের রাউন্দি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশকর্মীদের দিকে ঢিল, পাথর ছোড়েন। তাতে এক সাব-ইনস্পেক্টর ও এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। ভেঙেছে গাড়ির কাচও।

জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্রামবাসী পুলিশের তদন্তে বাধা দেন। দুই পুলিশকর্মী জখম হন। নির্দিষ্ট মামলা করা হয়েছে।’’

গ্রামবাসীদের পাল্টা অভিযোগ, পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের অট্টহাস মন্দিরে এর আগেও চুরির ঘটনায় এই গ্রামের লোকেদের আগে আটক করা হয়েছে। কিন্তু পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চুরির মালও উদ্ধার হয়নি। বারবার গরিব মানুষদের ‘হেনস্থা’ করা হচ্ছে বলেও তাঁদের ক্ষোভ। শুক্রবার গভীর রাতে রাতে ওই ঘটনার পরে শনিবার সারা দিনই পুলিশি টহল চলে গ্রামে। পরে এক জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।

গত ১৪ মে মন্দিরে পুজো করতে গিয়ে গর্ভগৃহের তালা ভাঙা দেখেন পুরোহিত। তালাটি মেলে পাশে নোনামাঠে, ঈশানী নদীর জলে। মন্দির কমিটির অভিযোগ, বিগ্রহের বেশ কিছু সোনা-রুপোর গয়না চুরি গিয়েছে। ঘটনার পরে নিরাপত্তায় ঢিলেমির অভিযোগে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, আগেও ওই সতীপীঠে বার চারেক চুরি হয়েছে। ২০১৩ সালে দেবীর অষ্টধাতুর বিগ্রহ চুরির পরেও কাউকে গ্রেফতার তো দূর, চুরি যাওয়া জিনিসও উদ্ধার হয়নি।

শুক্রবার মন্দির কমিটির অভিযোগের ভিত্তিতে রাউন্দি গ্রামে তল্লাশিতে যান কেতুগ্রাম থানার পুলিশকর্মীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারই ওই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছিল। শুক্রবার তাঁকে ছাড়াতে দলবল নিয়ে থানায় যান গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে, ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ফের ওই একই পাড়ার আর এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুরু হয় ‘অশান্তি’। অভিযোগ, পুলিশের গাড়িতে ঢিল ছোড়েন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পাথরের আঘাতে মাথা ও পিঠে চোট পান এক কনস্টেবল ও এক এসআই।

গ্রামে এ দিন গিয়ে দেখা যায় এলাকা থমথমে। ধৃত যুবকের মায়ের দাবি, ‘‘ছেলে খেতমজুরের কাজ করে। চাষবাস নিয়েই থাকে। পুলিশ খামোখা আমাদের হয়রান করছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, পুলিশের জন্য দৈনন্দিন কাজে বাধা পড়ছে তাঁদের। বেশ কিছু পরিবার ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

এ দিন দুপুরে শ’দুয়েক পুলিশ নিয়ে গ্রামে তল্লাশি চালান এসডিপিও (কাটোয়া) ত্রিদিব সরকার। তিনি এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। গ্রামবাসীর অভিযোগ না মানলেও, আলাদা করে মুখ খোলেননি পুলিশ সুপারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Ketugram Theft Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE