প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। তাঁদের মধ্যে বর্ধমান শহরেরই ১২ জন। এর মধ্যে একই পরিবারের দু’জন রয়েছেন। ২৩টি ব্লক ও ছ’টি পুরসভা নিয়ে গঠিত এই জেলায় শনিবার রাত পর্যন্ত করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪৬ জন। তার মধ্যে বর্ধমান পুরসভা এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো পেরিয়ে গিয়েছে।
বর্ধমান শহরের পাশাপাশি, জেলার আরও কয়েকটি এলাকাতেও সংক্রমণ বাড়ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী শনিবার বলেন, ‘‘বাছাই করা কয়েকটি এলাকায় ফের ‘লকডাউন’ করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’’
প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের মতে, কিছু জায়গায় সম্ভবত গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে। তা আটকাতে হলে ‘লকডাউন’ করতে হবে। ‘লকডাউন’ উঠলে রাস্তায় যাতে ভিড় না হয়, তা দেখার জন্য পুলিশকে যেমন সতর্ক থাকতে হবে, তেমনই সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। জেলায় শনিবার পর্যন্ত ‘অ্যাক্টিভ’ রোগী রয়েছেন ৩৪৩ জন।
বর্ধমান শহরে করোনা-আক্রান্ত লাফিয়ে বাড়ছে কেন, প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের অন্দরে। শহর টানা এক সপ্তাহ ‘লকডাউন’ করার পরেও করোনায় রাশ টানা যায়নি। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, শ’দেড়েক আক্রান্তের মধ্যে ১০১ জন কী ভাবে আক্রান্ত হয়েছে, তার তথ্য পাওয়া যায়নি। বাকিদের কয়েকজন কলকাতা বা ভিন্ রাজ্য থেকে এসেছিলেন। তাঁদের সংযোগে দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কালীবাজারের কবাডি মাঠের কাছে একই পরিবারের দু’জন মারা গিয়েছেন। লক্ষ্মীপুর মাঠে পাশাপাশি বাড়িতে দু’জন করোনা-আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। এ ছাড়াও সুভাষপল্লি, চৌধুরী চিঁড়ে মিল, ইছালাবাদ, নীলপুরের মতো জায়গায় করোনা-আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর মিলেছে। বেশিরভাগ জন করোনা-উপসর্গ নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে মৃত্যুর পরে করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছে।
পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ বাড়াতে শহরের সুকান্তপল্লিতে ও সংস্কৃত লোকমঞ্চে জেলা স্বাস্থ্য দফতর শিবির করেছে। স্বাস্থ্য দফতর মনে করছে, অকারণে বাইরে বেরনো, দোকানে আড্ডা, দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে বাজার করা, ‘মাস্ক’ বা ‘গ্লাভস’ ব্যবহারে অনীহা বাড়ছে এক শ্রেণির বাসিন্দাদের মধ্যে। সেই সঙ্গে ‘লকডাউন’ উঠে যাওয়ার পর থেকে কলকাতা, ভিন্ জেলা ও ভিন্ রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ছে। তাতেই পাল্লা দিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সিএমওএইচ প্রণব রায় বলেন, ‘‘মানুষ নিজে সচেতন না হলে সংক্রমণ রোধ করা যাবে না। তাই স্বাস্থ্য-বিধি এবং দূরত্ব-বিধি মেনে চলার আবেদন বারবার জানানো হচ্ছে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy