জলের জন্য লাইন স্কুলে। মঙ্গলবার নিয়ামতপুরে। নিজস্ব চিত্র
তাপপ্রবাহের জেরে সরকারি স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য। আজ, বুধবার থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ছুটি থাকবে। সেই সঙ্গে বেসরকারি স্কুলগুলিকেও ক’দিন ছুটি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমানের অনেক বেসরকারি স্কুলেই ক্লাসের সময় কমানো হলেও ছুটি দেওয়া হচ্ছে না।
সোমবার গলসি ২ ব্লকের বেলগ্রামের দাসপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির দুই পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। গরমের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি শিক্ষক ও অভিভাবকদের। সরকারি স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করার পরে স্বস্তিতে অভিভাবকেরা। সোমবার শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি স্কুলকেও ক’দিন জন্য ছুটি দিতে অনুরোধ করেন। পরে বাড়তি ক্লাস নিয়ে ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এই শিল্পাঞ্চলে কিছু বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বুধ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ছুটি দিয়েছে। তবে অনেকেই ছুটি না দিয়ে স্কুলের সময়সীমা কমিয়েছে।
দুর্গাপুরে স্টিল টাউনশিপে মেয়েদের একটি বেসরকারি স্কুল বুধ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ছুটি দিয়েছে। কিন্তু একই কর্তৃপক্ষের অধীনস্থ ফুলঝো়ড়ের স্কুলে ছুটি না দিয়ে স্কুলের সময় কমিয়ে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত করা হয়েছে। বিধাননগরের একাধিক স্কুল এবং কমলপুরের একটি স্কুলও স্কুলের সময় সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত করেছে। কমলপুরের স্কুলটি অবশ্য নার্সারি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছুটি দিয়েছে। জওহরলাল নেহরু রোডের একটি স্কুল দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা সামনে থাকায় শুধু এই দু’টি ক্লাস খোলা রেখেছে। অন্য শ্রেণিদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরে যে রকম গরম রয়েছে তাতে অনেক পড়ুয়াই স্কুল থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দুর্গাপুরের এই সব স্কুলগুলিতে শুধু শহর নয়, কাঁকসা, লাউদোহা, পাণ্ডবেশ্বর, অণ্ডাল, উখড়া, এমনকী বড়জোড়া থেকেও অনেক পড়ুয়া আসে। উখড়ার তপন গড়াই, অণ্ডালের সুশীল সিকদারেরা বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের এত দূর থেকে পাঠাই। বাড়ি ফিরতে ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগে। সময় কমিয়ে সাড়ে ১১টা করা হলেও যখন ওরা বাড়ি ফিরবে তখন চড়া রোদ। অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।’’ কাঁকসার এক অভিভাবক অপর্ণা দে-র কথায়, ‘‘বাচ্চাদের খুবই অসুবিধে হবে। ক’টা দিন ছুটি দিলেই ভাল হত।’’
মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘বহু অভিভাবক আমাদের কাছে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। যে সব স্কুল ছুটি দেয়নি, তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’
তাপপ্রবাহের জেরে শুধু পড়ুয়ারা নয়, জেরবার সব বাসিন্দাই। বেলা একটু বাড়তেই গরম হাওয়া বইতে থাকায় রাস্তা সুনসান হয়ে পড়ছে। ভিড় দেখা যাচ্ছে শুধু ডাব, শরবতের দোকানের সামনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy