রবি ও বোরো মরসুমে সেচের জল দেওয়ার আশ্বাস।
গত বার রবি ও বোরো চাষের জন্য জল দিতে পারেনি সেচ দফতর। তবে এ বার জলাধারগুলিতে যথেষ্ট জল থাকায় রবি ও বোরো মরসুমে জল নিয়ে চাষিদের মধ্যে হাহাকার থাকবে না বলে আগেই জানিয়েছিলেন সেচ দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের কর্তারা। বৃহস্পতিবার একটি বৈঠকে ঠিক হয়, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি ও বাঁকুড়াকে রবি ও বোরো চাষের জন্য ৪,৮৮,৫২০ একর ফুট জল ধাপে ধাপে দেওয়া হবে। ওই জলে পূর্ব বর্ধমান ও হুগলি মিলিয়ে ৫০ হাজার একর জমিতে রবি চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই চার জেলায় বোরো চাষ হতে পারে ১,৪৭,৫৫০ একর জমিতে।
সেচ দফতরের দামোদর ডিভিশনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (বর্ধমান) ভাস্করসূর্য মণ্ডলের দাবি, “মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ৫২০ একর ফুট জল রবি ও বোরো মরসুমের জন্য পাওয়া যাবে। স্মরণাতীত কালের মধ্যে সামনের মরসুমে বোরো চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি জমিতে জল পাঠানো সম্ভব হবে।’’
সেচ দফতরের দাবি, এ বছর সেচখালের মাধ্যমে জল পেয়ে পূর্ব বর্ধমানে ৯৯,৪০০ একর, পশ্চিম বর্ধমানে ৩,১৫০ একর, হুগলিতে ২৩,০০০ একর ও বাঁকুড়ায় ২২,০০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা সম্ভব হবে। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ১ ও ২, ভাতার, জামালপুর, বর্ধমান ১ ও ২, গলসি ১ ও ২, আউশগ্রাম ১ ও ২ মিলিয়ে মোট ১০টি ব্লকে বোরো চাষের জল পৌঁছবে। অর্থাৎ, কাটোয়া ও কালনা মহকুমার চাষিদের ভূগর্ভস্থ জলের উপরেই নির্ভর করতে হবে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল এ দিন বৈঠকে দাবি করেন, “আমাদের জেলায় সেমি-ক্রিটিকাল, ক্রিটিকাল ব্লক রয়েছে। সেই সব ব্লকে জল পৌঁছতে না পারলে, চাষিদের ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করতে হবে। সে জন্য ওই সব ব্লকেও যাতে জল পৌঁছয় সেটা দেখতে হবে।’’
কৃষি ও সেচ দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে মাত্র ৪৪ হাজার হেক্টর জমির জন্য জল পাওয়া গিয়েছিল। তার পরেও ১ লক্ষ ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। ২০১৭ সালে ১২ হাজার হেক্টর জমির জন্য জল মিলেছিল। চাষ হয়েছিল ১ লক্ষ ৪১ হাজার জমিতে। গত বছর জল মেলেনি। তার পরেও ১ লক্ষ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। এই জেলায় সাধারণত ১ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। ডিভিসি তার মধ্যে ৭৮ হাজার একর জমিতে জল দিত। এ বছর সেই এলাকা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৯৯,৪০০ একরে। ফলে, জমিতে জল পাওয়া নিয়ে আমনের মতো সমস্যায় পড়তে হবে না, দাবি আধিকারিকদের।
জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, রবি চাষের জন্য ৩০ ডিসেম্বর থেকে জল ছাড়া হবে। আর বোরো চাষের জন্য ৩০ জানুয়ারি প্রথম জল ছাড়া হবে। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ধাপে ধাপে জল দেওয়া হবে।
এ দিনের বৈঠকে কোন, কোন সেচখাল দিয়ে জল ছাড়া হবে, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। মোট ১২টি খাল দিয়ে চার জেলায় জল বণ্টন করা হবে। জেলা পরিষদের সেচ ও কৃষি বিভাগের স্থায়ী সমিতির সদস্য নুরুল হাসান বলেন, “শুধু গলসির গলিগ্রাম ক্যানালের গেট বন্ধ থাকবে। তবে দুর্গাপুর, পানাগড়, দামোদর ব্রাঞ্চ ক্যানাল দিয়ে জল পৌঁছবে বলে সেচ দফতর জানিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy