Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
এক ছিলিমে

দরকার সচেতনতা প্রচারেরও

ভিন্-রাজ্য থেকে ঢুকছে গাঁজার পুরিয়া, গাঁজার হাতবদল কী ভাবে, এলাকায় প্রভাব কী, পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি কেমন, কী অবস্থা নাগরিক সচেতনতার, খোঁজ নিল আনন্দবাজার পত্রিকা। প্রথমেই এই নেশার ক্ষতিকারক দিকটি নিয়ে চিকিৎসকেরা নাগরিকদের সচেতন করতে চান। চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত গাঁজা সেবনের ফলে স্নায়ুরোগ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ তৈরিতে গাঁজার প্রয়োগ হতে পারে জানিয়েও চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এই নেশায় দৃষ্টিবিভ্রম হয়। মানসিক বৈকল্য ঘটতে পারে।’’

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪২
Share: Save:

হাতের নাগালে গাঁজা, এমনই অভিযোগ জেলায়। কিন্তু জেলার বিশিষ্ট জনদের মতে, এই ছিলিম টানার ‘অভ্যাস’ পুরোপুরি বন্ধের জন্য জরুরি পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি। জরুরি, নাগরিক সচেতনতা তৈরিও। মদ বা ড্রাগের বিরুদ্ধে সেই সচেতনতা অভিযান যেমন চলে, সেই মাত্রায় গাঁজার বিরুদ্ধে প্রচার তেমন হয় না বলেই অভিযোগ নাগরিকদের।

প্রথমেই এই নেশার ক্ষতিকারক দিকটি নিয়ে চিকিৎসকেরা নাগরিকদের সচেতন করতে চান। চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত গাঁজা সেবনের ফলে স্নায়ুরোগ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ তৈরিতে গাঁজার প্রয়োগ হতে পারে জানিয়েও চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এই নেশায় দৃষ্টিবিভ্রম হয়। মানসিক বৈকল্য ঘটতে পারে।’’ একই রকম বক্তব্য আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাসেরও। তাঁর মতে, ‘‘এই নেশার ফলে মানসিক ভারসাম্য হারানো, হৃদরোগ হতে পারে। এমনকি, ঠিক ভাবে খাবার না খেলে গাঁজার নেশা যাঁরা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অপুষ্টিজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।’’ নিখিলচন্দ্রবাবু জানান, গাঁজার নেশা থেকে মুক্তি পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিয়মিত কাউন্সেলিং করানো জরুরি। জরুরি পরিবারের পাশে থাকাটাও।

কিন্তু বিশেষ সূত্রে জানা যায়, প্রধানত ট্রেনে করে এবং সড়ক-পথে ভিন্-রাজ্য থেকে গাঁজা জেলায় ঢুকছে। এ ক্ষেত্রে নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও নজরদারিতে খামতির কথা মানতে চাননি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। এডিসিপি ‌(‌সেন্ট্রাল) সায়ক দাস, ‘‘গাঁজার কারবার বন্ধে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালায়। গত আট মাসে আসানসোল উত্তর এবং জামুড়িয়া থানা এলাকায় তিনটি দোকানে অভিযান চালানো হয়। এই কারবার চালানোর অভিযোগে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়।’’ পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফের মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক অচ্যুতানন্দ ঝা-ও বলেন, ‘‘ট্রেনে, স্টেশনে লাগাতার অভিযান চলছে।’’

তবে শুধুমাত্র পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারির উপরে নির্ভর করলেই এই নেশাকে রোখা যাবে না বলে মনে করছেন নাগরিকদের একাংশ। দরকার সচেতনতাও। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিজ্ঞতা, মদ বা ড্রাগের নেশার বিরুদ্ধে যে সংখ্যায় সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হয়, তার তুলনায় গাঁজার কারবার রুখতে প্রচার প্রায় হয় না বললেই চলে। কেন এমনটা? রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত প্রবীর ধর, রানিগঞ্জের মঞ্জু গুপ্তেদের ব্যাখ্যা, মদের সামাজিক প্রভাব প্রত্যক্ষ ভাবে সমাজে পড়ে। কিন্তু গাঁজার ক্ষেত্রে তুলনায় সেই প্রভাব কম। তাই হয়তো প্রচারে গা করা হয় না। যদিও তাঁদের মতে, ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ক্ষেত্রে এই নেশাও সর্বনাশা। তাই জরুরি সচেতনতা প্রচারও। (শেষ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Awareness Campaign Canabbis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE