Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কাটোয়ায় কার্তিকের ‘থাকা’য় নতুন গল্প বলছেন দুই বন্ধু

কাটোয়ার গৌরাঙ্গপাড়ার বাসিন্দা, গৃহশিক্ষক নিত্যগোপাল গোস্বামী আর এক শিল্পী অমিত পালের সঙ্গে মিলে ‘থাকা’র আকার, বিষয় ভাবনায় গত কয়েক বছর ধরেই নতুনত্ব আনছেন।

এ বারের থাকা তৈরিতে ব্যস্ত নিত্য ও অমিত।

এ বারের থাকা তৈরিতে ব্যস্ত নিত্য ও অমিত।

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০১
Share: Save:

কার্তিক লড়াইয়ের সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িত ‘থাকা’। মূলত চাকা লাগানো তিন কোনা লোহার খাঁচায় থাকে থাকে পুতুল সাজিয়ে পুরাণের নানা গল্প বলা হয়। তবে থিমের দাপটে কিছুটা একপেশে হয়ে পড়েছিল কাটোয়ার কার্তিক পুজোর এই ঐতিহ্য। গত কয়েক বছর ধরে ‘থাকা’র ভাবনায় বদল এনে ঐতিহ্য ধরে রাখার লড়াইয়ে নেমেছেন দুই বন্ধু। কাটোয়ার গৌরাঙ্গপাড়ার বাসিন্দা, গৃহশিক্ষক নিত্যগোপাল গোস্বামী আর এক শিল্পী অমিত পালের সঙ্গে মিলে ‘থাকা’র আকার, বিষয় ভাবনায় গত কয়েক বছর ধরেই নতুনত্ব আনছেন।

বছর তেরো আগে সরস্বতী পুজোর মূর্তি গড়তে গিয়ে দুই বন্ধুর আলাপ। সেখান থেকেই শুরু হয় ‘থাকা’ ধরে রাখার লড়াই। নিত্যবাবুর কথায়, ‘‘থাকা যেন শুধুই লড়াইয়ে ঘোরানোর বস্তু হয়ে উঠছিল। দর্শনার্থীদের তেমন নজরে পড়ত না। তাই ভাবলাম বিশেষত্ব আনলে তবেই লোকে থিমের পাশাপাশি থাকা দেখতেও ভিড় জমাবেন।’’

যেমন ভাবা তেমন কাজ। ২০০১ সালে প্রথম আওয়াজ ক্লাবের থাকায় ‘মেঘনাথ বধ’ কাব্যের একটা অংশ তুলে ধরেন নিত্যবাবু। তাঁর ভাবনা অনুয়ায়ী পুতুল তৈরি ও সাজানোর কাজ করেন অমিতবাবু। বছর আটেক আগে প্রতিবাদ ক্লাবের থাকায় ‘গুপী গাইন বাঘা বাইনে’র গল্প বলেন তাঁরা। ওই বছরই কালীগঞ্জের কালীপুজোয় থাকায় ছিল ‘বিক্রম বেতালে’র কাহিনি। বছর দুয়েক আগে প্রতিবাদ ক্লাবের তরফে থাকায় সর্বশিক্ষা অভিযানের ছবি তুলে ধরা হয়। সেখানেও কারিগর ছিলেন এই দু’জন। সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোলে’র বিভিন্ন ছড়া লিখে ও চরিত্র এঁকে একটি কমিক ‘থাকা’ও তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়াও বছর দুয়েক আগে ঝঙ্কার ক্লাবের গোলাকৃতি থাকা, থাকার পিছনে দৃশ্যাঙ্কন ও তুলো দিয়ে পুতুল সাজানোর ভাবনা তাঁরই।

নতুন ভাবনার থাকা।

নিত্যবাবু জানান, এ বছর আওয়াজ ক্লাবের থাকার থিম ‘মহাপ্রভুর মস্তক মুণ্ডন’। ‘থাকা’র পিছনে দৃশ্যাঙ্কনে কাটোয়ার গৌড়বাড়ির শতাব্দী প্রাচীন গাছের ছবি ফুটিয়ে তোলা হবে। সঙ্গে কেশব ভারতীর উপস্থিতিতে মধু নাপিতের দ্বারা মহাপ্রভুর মস্তক মুণ্ডন দেখানো হবে। মোট ২৬টা পুতুল থাকবে। বিভিন্ন ক্লাবের উদ্যোক্তা দেবব্রত বন্দোপাধ্যায়, তপন বন্দোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘নিত্য বিনা পারিশ্রমিকে শুধুই মনের টানে বিষয় ভাবনার কাজ করে। ওর ভাবনা মতোই ও শিল্পী খুঁজে থাকা তৈরি করায়।’’ নতুনত্ব আনায় কাছারি রোড, সার্কাস ময়দান এলাকার থিমের প্রতিমার পাশাপাশি পুরনো এলাকার এই ‘থাকা’ দেখতে ভিড় বেড়েছে বলেও তাঁদের দাবি।

নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kartik Puja 2018 Kartik Puja Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE