বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করলে তবেই মিলবে দোতলা বা তার থেকে বেশি তল বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র। এমনই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া পুরসভা। ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ বাড়াতেই এই উদ্যোগ বলে পুরসভার কর্তারা জানান। গত বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।
পুরসভা জানায়, ইতিমধ্যেই যাঁদের দোতলা বাড়ি রয়েছে, তাঁরা আরও তল বাড়াতে চাইলে নির্দিষ্ট ফর্মপূরণ করে পুরসভার কাছে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে। সেই ফর্মে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে কি না তা জানতে চাওয়া হবে। নতুন দোতলা বা তার থেকে বেশি তল বাড়ির ছাড়পত্রের ক্ষেত্রেও এ ব্যবস্থা থাকছে।
ভূগোলের শিক্ষক তথা কাটোয়া পরিবেশকর্মী টোটোন মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘কাটোয়া ও দাঁইহাটের বিভিন্ন এলাকায় ৩৬ থেকে ৪৬ মিটার গভীর থেকে নলকূপের দ্বারা জল তোলা হয়। ফলে, ভূগর্ভস্থ জলের তল ক্রমশ নীচে নামছে।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া পুরসভা এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য সাবমার্সিবল পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ জল তোলা হয়। পাশাপাশি, নলকূপের জল নির্মাণ শিল্পেও ব্যবহৃত হয়। তা ছাড়া, জলাশয় কমে যাওয়া, নগরায়ণ, বৃষ্টি কম-সহ নানা কারণে ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার কমে যাচ্ছে বর্তমানে।
পুরসভা সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকেরা বৃষ্টির জল সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তের পরে কাটোয়ার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাদে পাঁচ ফুটের জলাধার তৈরি করতে হবে। সেখানে জমা জল জল পাইপের মাধ্যমে সরাসরি ভূগর্ভে প্রবেশ করবে।’’
ঘটনাচক্রে, এর আগে কেতুগ্রাম ২ ব্লকে নলকূপের পাশে ‘সোক পিট’-এর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেখানে দু’শোটি নলকূপে এই ব্যবস্থা রয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়।
কাটোয়া পুরসভা সূত্রে জানা যায়, মাসে গড়ে ২৫টি দোতলা বা তার থেকে তল বাড়ির ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এ বার সব ক্ষেত্রেই এই সিদ্ধান্ত মানতে হবে বলে পুরসভা জানায়।
পুরসভার এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পালও। স্থানীয় বাসিন্দা নিলয় সামন্ত, মল্লিকা হাজরারাও বলেন, ‘‘সময়োপযোগী পদক্ষেপ এটা। অবশ্যই মেনে চলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy