বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানার সামনে কর্মীদের জমায়েত। ছবি: পাপন চৌধুরী
শ্রমিক-কর্মীরা আশার আলো দেখছেন। কিন্তু এখনই আনন্দে উদ্বেলিত হওয়ার কারণ দেখছেন না শ্রমিক নেতাদের অনেকেই। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে ন্যাশনাল কোম্পানি ল আপিল ট্রাইবুনালের (এনসিএলএটি) রায়কে স্বাগত জানালেও সরকার কত দিনে তা বাস্তবায়িত করবে, সে নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি তাঁদের। রায় কার্যকর না করা হলে পরে তাঁরা আইনি পথে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি জনা কয়েক নেতার।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই বার্নপুরে কারখানার গেটে শ্রমিক-কর্মীদের জটলা দেখা গিয়েছে। অনেকে শ্রমিক নেতৃত্বের কাছে রায়ের বিষয় বিশদে জানতে চেয়েছেন। সিটু নেতা দেবাশিস কর্মকারের দাবি, কারখানা খুললে সর্বাগ্রে ঠিকা শ্রমিকদের কাজে বহাল করা উচিত। কারণ, স্থায়ী শ্রমিক-কর্মীরা কিছু সুবিধা পেলেও ঠিকা শ্রমিকদের কার্যত খালি হাতে বার করে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে দাবি করেন সিটুর পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা এনসিএলএটি-র রায়ের সার্টিফায়েড কপি চেয়ে পাঠিয়েছি। পুরো বিষয়টি খুঁটিয়ে জানার পরেই এ নিয়ে কথা বলা সম্ভব।’’ ভোটগ্রহণের আগে এই রায় দেওয়া হলে কি তার কোনও প্রভাব ভোটে পড়ত? বংশগোপালবাবুর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার একতরফা ভাবে কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে। মানুষ সবই বোঝেন। তাই কোনও প্রভাব পড়ত না।’’
আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক হরজিৎ সিংহেরও বক্তব্য, ‘‘এই রায় শ্রমিকদের জয়। কিন্তু বর্তমান সরকার তা কতটা কার্যকর করবে, সন্দেহ আছে।’’ তবে এনসিএলএটি-র এই রায় উপেক্ষিত হলে তাঁরা আইনের পথে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। আইএনটিটিইউসি-র জেলা চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন আবার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানাকে রেল অধিগ্রহণ করেছিল। শ্রমিক-কর্মীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েছিলেন। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এই কারখানা বন্ধ করে দিল। আমাদের নেত্রী এর প্রতিবাদ করেছেন। কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, তা এই রায়েই প্রমাণ।’’ তাঁর আরও দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে এই কারখানা বন্ধ করতে চেয়েছিল, তা এলাকাবাসী জানেন। তাই ভোটগ্রহণের আগেও যদি এই রায় দেওয়া হত, তার কোনও প্রভাব পড়ত না নির্বাচনে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন।’’
বিএমএসের জেলা মুখপাত্র তথা বিজেপি নেতা পবন সিংহ অবশ্য দাবি করেন, তাঁরা বরাবরই বার্ন স্ট্যান্ডার্ড বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। কারখানার পুনরুজ্জীবনের দাবিও তুলেছেন। সেই দাবিকে মর্যাদা দিয়েই এনসিএলএটি রায় ঘোষণা করেছে বলে দাবি বিএমএসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy