Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘পাতাল প্রবেশ’ হবে না তো?

গত শুক্রবার সকালে আচমকা ধস নামে সামডি রোড-সহ লহাট মোড় এলাকায়। তিনটি দোকান ও দু’টি ফাঁকা ঘরের মেঝে ও দেওয়ালে বড়সড় ফাটল তৈরি হয়।

সালানপুরের সামডিতে এমনই ধস নেমেছিল। নিজস্ব চিত্র

সালানপুরের সামডিতে এমনই ধস নেমেছিল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৫০
Share: Save:

পরপর ধস ও ফাটল। এর জেরে আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে সালানপুরের সামডি ও লহাট মোড় লাগোয়া বাজার এলাকায়। ফাটল ধরা দোকানের মালিকেরা জানান, তাঁরা অন্যত্র উঠে যাচ্ছেন। তাঁরা ইসিএলের কাছে পুনর্বাসনেরও দাবি জানিয়েছেন। ইসিএল অবশ্য জানায়, পুনর্বাসনের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। সোমবার ওই এলাকায় ‘বোরহোল’ করে ধসের কারণ খোঁজা ও গভীরতা মাপার কাজ শুরু করা হয়েছে।

গত শুক্রবার সকালে আচমকা ধস নামে সামডি রোড-সহ লহাট মোড় এলাকায়। তিনটি দোকান ও দু’টি ফাঁকা ঘরের মেঝে ও দেওয়ালে বড়সড় ফাটল তৈরি হয়। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। বাসিন্দারা জানান, শনিবার ফের লাগোয়া অঞ্চলে নতুন করে ফাটল দেখা দেয়। রবিবার নতুন করে ধস ও ফাটল না ধরলেও আগের ফাটলগুলি ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে বলে বাসিন্দাদের দাবি।

পরপর এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা চরমে উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলির মালিকেরা দোকানের সামগ্রী সরিয়ে অন্যত্র উঠে যাচ্ছেন। এলাকায় প্রায় ৩৮ বছরের ব্যবসা দু’চাকা গাড়ির শোরুম মালিক শ্যামল মণ্ডলের। তিনি বলেন, ‘‘এই অবস্থায় মনে হচ্ছে, যে কোনও দিন পাতাল প্রবেশ ঘটবে। তাই উঠে যাচ্ছি। ইসিএলের কাছে পুনর্বাসনের জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’ প্রায় আড়াই দশক ধরে তেলেভাজার দোকান দিয়ে সংসার চালান ভ্রমর চন্দ। তাঁর দোকানের দেওয়াল-মেঝেতে ফাটল ধরেছে। তিনি বলেন, ‘‘কার্যত শূন্যে ঝুলছি। ভয়ে উঠে যাব ভেবেছি। ইসিএলের কাছে পুনর্বাসনের আবেদন করেছি।’’ প্রায় আঠারো বছরের মিষ্টি ব্যবসায়ী ভবানী সেনও একই কথা জানান। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ধসের আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে। ব্যবসার কী হবে জানি না।’’

লহাট মোড় লাগোয়া বাজার এলাকায় প্রায় ৪০টি দোকান রয়েছে। সামডি, লহাট, মুক্তাইচণ্ডী-সহ আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দারা নিয়মিত এই বাজার থেকেই জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন। সম্প্রতি ধসের জেরে বাজারের ভবিষ্যৎ কী, সে প্রশ্নও উঠেছে এলাকায়। সামডি পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল নেতা জনার্দন মণ্ডল বলেন, ‘‘ইসিএল কর্তাদের কাছে ধস ও ফাটল আটকাতে মাটির তলার ফাঁকা অংশে বালি ও মাটি ভরাটের দাবি জানিয়েছি।’’ পাশাপাশি, তৃণমূল ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসনেরও দাবি জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইসিএলের কাছে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে বলে জানান বিডিও (সালানপুর) তপনকুমার সরকার। এ দিকে, ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার জিএম প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘‘ধস আটকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। পুনর্বাসনের দাবির বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ECL Landslide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE