Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হল্ট স্টেশন আবার চালু করার আর্জি

ন্যারোগেজ় ট্রেন চলাকালীন পাঁচুন্দি ও নিরোল হল্টের মাঝে স্টেশনটি ছিল। কিন্তু ২০০৬-র ১ জুলাই স্টেশনটি বন্ধ হয়। নষ্ট হয়ে যায় যাবতীয় পরিকাঠামোও। এর পরে ২০১৩-র ১৪ জানুয়ারি ন্যারোগেজ় লাইন বন্ধ করে ওই ৫২ কিলোমিটার পথে ব্রডগেজ় তৈরির কাজ শুরু হয়।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৫
Share: Save:

বছরভর কাটোয়ার অট্টহাস সতীপীঠে পুণ্যার্থীদের আনাগোনা থাকে। এক সময়ে কাটোয়া-আমোদপুর ন্যারোগেজ় লাইনে থাকা নিরোল গ্রাম হল্ট স্টেশন ছিল। সতীপীঠে যাতায়াত সহজ করতে আবার তা নতুন করে তৈরি করে চালুর জন্য দাবি জানাচ্ছেন কাটোয়া, কেতুগ্রাম-সহ নানা এলাকার বাসিন্দারা।

ন্যারোগেজ় ট্রেন চলাকালীন পাঁচুন্দি ও নিরোল হল্টের মাঝে স্টেশনটি ছিল। কিন্তু ২০০৬-র ১ জুলাই স্টেশনটি বন্ধ হয়। নষ্ট হয়ে যায় যাবতীয় পরিকাঠামোও। এর পরে ২০১৩-র ১৪ জানুয়ারি ন্যারোগেজ় লাইন বন্ধ করে ওই ৫২ কিলোমিটার পথে ব্রডগেজ় তৈরির কাজ শুরু হয়। গত বছর ২৪ মে সেই লাইনের উদ্বোধন হয়। এলাকাবাসী জানান, ব্রডগেজ় চালুর পরে সতীপীঠে আসার জন্য পুণ্যার্থীরা রেলপথকেই বেশি ব্যবহার করছেন। অগ্রদ্বীপের অমিত দত্ত, নদিয়ার কালীগঞ্জের সুপ্রিয় বণিকেরা বলেন, ‘‘নিরোল হল্টে নেমে সাত কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে অট্টহাসে আসতে হচ্ছে। সেখানে গ্রামে হল্ট স্টেশন হলে কম রাস্তা পেরোতে হবে।’’ নিরোলের বাসিন্দা আশিস রায়ের কথায়, ‘‘নিরোলের পাশাপাশি, নিরোল গ্রাম হল্ট স্টেশনটি চালু হলে পাকা রাস্তা পাবেন পুণ্যার্থীরা। পাশাপাশি, উপকৃত হবেন নিরোল, অম্বলগ্রাম, পুরুলিয়ার বাসিন্দারাও।’’
এলাকাবাসী জানান, গ্রামের হল্ট স্টেশনটি চালুর দাবিতে পূর্ব রেলের কাছে বারবার আর্জি জানানো হয়েছে। নিরোল পঞ্চায়েত এবং কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের মাধ্যমেও দাবি জানানো হয়। অট্টহাস মন্দির কমিটির অধ্যক্ষ মহারাজ মহেন্দ্রগিরি বলেন, ‘‘বছরভর এখানে পুণ্যার্থীর ভিড় থাকে। তাঁদের সুবিধার জন্য গ্রামের হল্ট স্টেশনটি চালু করার জন্য আর্জি জানিয়েছি।’’

পূর্ব রেল সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়দের দাবি মেনে চলতি বছরের ৪ মার্চ ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টর (কমার্শিয়াল) ওই স্টেশন পরিদর্শন করেন এবং নিরোল পঞ্চায়েতেও স্টেশন চালু কতটা জরুরি, সে বিষয়ে খোঁজখবর করা হয়। ফের গত ৬ মে গ্রামের হল্ট স্টেশনে পরিদর্শনে যান কাটোয়ার সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (ওয়ার্কস) প্রলয়শঙ্কর চন্দ। ৩৫০ মিটার দীর্ঘ প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য মাপজোকও হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানা যায়। পাশাপাশি, টিকিট কাউন্টার, ছাউনি ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করার বিষয়েও প্রাথমিক পরিকল্পনা হয়। এই দুই বিভাগের পরিদর্শনের ভিত্তিতে অপারেটিং বিভাগ বিষয়টি খতিয়ে দেখে।

কিন্তু স্টেশনটি পুরোমাত্রায় চালুর বিষয়ে প্রযুক্তিগত কিছু বাধা রয়েছে বলে মনে করছেন রেল কর্তৃপক্ষের একাংশ। অপারেটিং বিভাগ জানায়, পাঁচুন্দি ও নিরোল হল্টের মাঝে দু’শো মিটার জায়গা জুড়ে একটি লেভেল ক্রশিং আছে। তা ছেড়ে গ্রামে হল্ট স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হলে ট্রেন দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে যান্ত্রিক সমস্যা হতে পারে। যদিও রেলের এই দাবির সঙ্গে সহমত নন এলাকাবাসীর একাংশ। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ডিভিশনাল রেলওয়ে ইউজ়ার্স কনসাল্টেটিভ কমিটির প্রাক্তন সদস্য আশিসবাবু বললেন, ‘‘কাটোয়া-বর্ধমান শাখায় শ্রীখণ্ড ও শ্রীপাট-শ্রীখণ্ডের মাঝে পাঁচশো মিটার দূরত্ব। সেখানে ইএমইউ চলছে। তা হলে পাঁচুন্দি ও নিরোল হল্টের মধ্যে ৩.৮৮ কিলোমিটার দূরত্ব হওয়া সত্ত্বেও কেন এখানে স্টেশন করা যাচ্ছে না?’’
নিরোল পঞ্চায়েত প্রধান মিহির মণ্ডল জানান, রেলের তরফে পঞ্চায়েতে কতগুলি গ্রাম ও মোট জনসংখ্যা কত, তা জানতে চাওয়া হয়। সঙ্গে রেললাইনে মাটি ফেলার জন্য প্রয়োজনে শ্রমিক দেওয়ার কথাও বলা হয়। পঞ্চায়েত রেলকে যাবতীয় তথ্য দিয়েছে বলে দাবি করেন মিহিরবাবু। রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (পূর্ব রেল) নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখন বিদ্যুদয়নের কাজ চলছে। ওই রেলপথে স্থানীয়দের অন্য দাবিগুলিও বিবেচনা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan NirolVillage Halt Station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE