প্রার্থীর সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র
এক সময়ে কংগ্রেসের ‘ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত ছিল এলাকা। সংগঠন শক্ত সিপিএমেরও। সেই কাটোয়ায় দলের বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের সমর্থনে সভা করতে এসে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই জনতার উদ্দেশে তাঁর আর্জি, ‘‘যারা দুর্বল তাদের ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না।’’
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, এ বারের ভোটে বিজেপিকেই প্রধান প্রতিপক্ষ বলে মনে করছে দল। সে কারণে নাম না করে কংগ্রেস ও সিপিএমকে ভোট দিলে তা নষ্ট হবে বলে বার্তা দিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কাটোয়া মহাকুমা কংগ্রেসের সভাপতি জগদীশ দত্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গত বিধানসভা ও লোকসভা ভোটে কাটোয়া শহরে তৃণমূলের ফলাফল বুঝিয়ে দিয়েছে, এখানে ওদের কী পরিস্থিতি। কাটোয়ার মানুষ বরাবর কংগ্রেসের পাশে আছেন।’’ বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাসের দাবি, ‘‘কে কী বলছেন, সে নিয়ে ভাবছি না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তৃণমূলের পতন অবশ্যম্ভাবী।’’
এ দিন কাটোয়া পুরসভা ময়দানে নিজের বক্তব্যে গোড়া থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ছিলেন অভিষেক। জ্বালানির দাম, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগে সরব হন তিনি। কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে তুলনা টানেন রাজ্যের নানা প্রকল্পের সাফল্যের। অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়েও ক্ষোভ জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অসমে নাগরিকপঞ্জি করে ২০ শতাংশ মানুষকে বাদ দিয়ে দিচ্ছে। বাংলার দশ কোটি মানুষের মধ্যে দু’কোটিকে বাংলাছাড়া করতে চায়। বর্ধমানে ১৭-১৮ লক্ষ মানুষ বাস করেন। হিসেব অনুযায়ী, চার লক্ষকে বাংলাছাড়া করতে চায় বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, শরীরের শেষ রক্তবিন্দু থাকা অবধি নাগরিকপঞ্জি হতে দেবেন না।’’
অভিষেক এ দিন আরও দাবি করেন, ‘‘২৩ মে বাংলার মানুষ বিজেপির পরলোকগমন প্রক্রিয়া করে দেবেন।’’ বর্ধমান পূর্বের বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘২৩ মে ভোট বাক্স খুললেই বোঝা যাবে কোন দল পরলোকগমন করবে।’’
এ দিনের সভামঞ্চে দেখা যায়নি কাটোয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি অমর রামকে। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের অনেকের দাবি, দলীয় নেতৃত্ব বারবার বৈঠক করার পরেও কাটোয়ায় দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব যে এখনও মেটেনি, তা এই ঘটনায় ফের সামনে এল। সভার পরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে অমরবাবুর অভিযোগ, ‘‘মঞ্চটা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। আমি সভায় গেলে আমার কাছে ভিআইপি কার্ড চেয়েছে। ২০১৫ সালে লড়াই করে যে দলকে এখানে ক্ষমতায় আনলাম, সেই দলের সভতেই ঢুকতে পেলাম না!’’ রীতিমতো অপমানিত হওয়ায় এই ঘটনা দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি। তবে তাঁর দলবদলের কোনও সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করেছেন অমরবাবু।
যদিও কাউকে অপমানের কথা উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘কড়া নিাপত্তার জন্য কার্ড দেখতে চেয়ে থাকতে পারেন নিরাপত্তাকর্মীরা। তাঁকে (অমরবাবু) পরে ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল ডাকতে গেলেও তিনি আসেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy