Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

জমজমাট রবিবারের প্রচার-পর্ব

প্রথম জন, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। অন্য জন, তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী, আসানসোলের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারেও বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়।

প্রচার শুরুর আগে ঘাগরবুড়িতে সপরিবার পুজো দিতে এলেন বাবুল সুপ্রিয়।

প্রচার শুরুর আগে ঘাগরবুড়িতে সপরিবার পুজো দিতে এলেন বাবুল সুপ্রিয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

এক জন জোর দিলেন নারী-ক্ষমতায়নের বিষয়ে। অন্য জন, কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্প রাজ্য সরকার রূপায়ণ করেনি বলে অভিযোগ করলেন। প্রথম জন, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। অন্য জন, তাঁরই প্রতিদ্বন্দ্বী, আসানসোলের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারেও বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। এ ভাবেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে জমে উঠল রবিবাসরীয় প্রচার।

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ হুড খোলা গাড়ি নিজেই চালিয়ে ঘাগরবুড়ি মন্দির চত্বরে আসেন বাবুল সুপ্রিয়। পাশেই ছিলেন স্ত্রী রচনা, ছোট মেয়ে নয়না। পুলিশ, রক্ষীদের ঘেরাটোপের মধ্যেই বাবুল চলে যান মন্দিরের ভিতরে। মিনিট পনেরো ধরে চলে পুজো। পুজো সেরে তিনি বলেন, ‘‘গত বারও এই মন্দিরে পুজো দিয়েই প্রচার শুরু করেছিলাম। রবিবার এই প্রচারের শুভ সূচনা হল। আগামী ২৩ মে আসানসোল কেন্দ্রে অবশ্যই মধুরেন সমাপয়েত হবে।’’ পুজো শেষে শুরু হয় প্রচার, জনসংযোগ। সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিজস্বীও তোলেন বাবুল। তাঁর সংযোজন: ‘‘গতবার বলেছিলাম, এই পাঁচ বছর এতো কাজ করব, যে পরের বার ভোট প্রচারে আসব না। আমার কাজেই আমার প্রচার হবে। অনেক বাধা পেয়েও প্রচুর কাজ করেছি। তবুও শেষমেশ রীতি অনুযায়ী প্রচারে বেরিয়েছি।’’

তবে বেলা গড়াতেই সকালের এই ‘হাল্কা মেজাজ’ উধাও। জামুড়িয়ার বেনালি মোড়ে দেওয়াল লিখনে যোগ দেন বাবুল। পরে নতুন এগারায় এসে বলেন, ‘‘গরীব মানুষের জন্য তৈরি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প চালু করেনি রাজ্য সরকার। তৈরি হয়নি ঘরে ঘরে শৌচাগার, আশ্রয়হীনদের বাড়ি। রাজ্যের এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার যে দল চালায়, তাদের ভোট নয়।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যদিও তৃণমূলের দাবি, এই রাজ্য সরকারের আমলে দৃষ্টান্তমূলক উন্নয়ন হয়েছে রাজ্যে। সেই সঙ্গে কারখানা বন্ধের প্রসঙ্গটি উস্কে দেন তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন। কারও নাম না করে রানিগঞ্জের এগারার এক কর্মিসভায় তিনি বলেন, ‘‘হিন্দুস্তান কেব্‌লস খুলতে পারব কি না, জানি না। চেষ্টা করব। তবে আর যাতে কোনও কারখানা বন্ধ না হয় সেই চেষ্টা করব।’’ সেই সঙ্গে মুনমুন তাঁর বক্তব্যে জোর দেন নারী-ক্ষমতায়নের বিষয়েও। নানা প্রকল্পের কথা বলে মুনমুন সভায় থাকা মহিলাদের বলেন, ‘‘শুধু পুরুষ কেন রোজগার করবেন, তোমরাও করবে। কেউ যেন না বলেন, ‘আমি কাজ করি না।’’’ মুনমুন বাংলার পাশাপাশি, হিন্দিতেও বক্তৃতা দেন। অন্য নানা দল ভোটের মুখে টাকার ‘লোভ’ দেখালেও ভোট তৃণমূলকেই দেওয়ার জন্যও আহ্বান জানান মুনমুন। সেই সঙ্গে হাল্কা সুরে মুনমুন এ-ও বলেন, ‘‘ভোট প্রচারে আমার মেয়েরা আসবে কি না, বলতে পারব না। তবে রাইমা আসবে। ছোটকে বললেই রেগে যাচ্ছে। ঝগড়া করেছে। ওকে আর বলব না। জামাইকে বলব।’’

রবিবাসরীয় প্রচার পর্বে পিছিয়ে ছিল না সিপিএম-ও। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরী এ দিন মূলত জোর দেন মিছিল-প্রচারে। সকালে কবিগুরু ২ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে সিপিএমের মিছিল বার হয়। প্রার্থী ছাড়াও পা মেলান বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায়সরকার প্রমুখ। মিছিলের সঙ্গে আদিবাসী নৃত্যও পরিবেশিত হয়। লাউড স্পিকার ব্যবহারের অনুমতি না থাকায় খালি গলাতেই বক্তব্য রাখেন আভাসবাবু।

এ দিন সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে দুর্গাপুর পূর্ব, দুর্গাপুর পশ্চিম ও কাঁকসা নিয়ে কর্মী বৈঠকের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা করেন দলের নেতারা।

সব রাজনৈতিক দলেরই দাবি, প্রচার পর্বে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতোই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE